Follow us
Search
Close this search box.

কর্নাটকের চমৎকার সব সৈকত

কর্নাটকের চমৎকার সব সৈকত

একদিকে সুনীল আরব সাগর, অন্যদিকে পশ্চিমঘাট পর্বতমালা, মাঝে সৈকত শহর মুরুদেশ্বর। কর্নাটকের উত্তর কন্নড় জেলার ভাটকল তালুকের অন্তর্গত মুরুদেশ্বর দক্ষিণ ভারতের একটি জনপ্রিয় ভ্রমণ ঠিকানা।

পশ্চিমঘাট পর্বতমালার ল্যান্ডস্কেপ আর আদিগন্ত আরবসাগর, এই হচ্ছে মুরুদেশ্বরের প্রাকৃতিক পটভূমি। পর্বত আর সমুদ্রবেষ্টিত কনডুকগিরি টিলার চূড়ায় ১২৩ ফুট উচ্চতার শিবমূর্তিটি সন্ধ্যায় যখন আলোর রোশনাইয়ে রঙিন হয় তখন মুরুদেশ্বরের আরেক রূপ। কনডুকগিরি টিলার তিনদিকেই আরব সাগরের বিস্তার। প্রসঙ্গত, মুরুদেশ্বরের শিবমূর্তিটি বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম শিবমূর্তি। উচ্চতম কৈলাশনাথ মহাদেবের মূর্তিটির অবস্থান নেপালে।

 

মুরুদেশ্বর সৈকত-লাগোয়া রাজা গোপুরম চালুক্য ও দক্ষিণ ভারতের কদম্ব স্থাপত্যশৈলীর একটি বিশিষ্ট নিদর্শন। ২০ তলার এই মন্দিরটির উচ্চতা ২৩৭.৫ ফুট। লিফটে চড়ে মন্দিরের ১৮ তলা পর্যন্ত ওঠা যায়। সেখান থেকে পশ্চিমঘাট পর্বতমালা ও আরবসাগরের নীল জলরাশির অবাক করা দৃশ্য মনকে আচ্ছন্ন তো করেই।

 

এখানে দিনমানের বেশিরভাগ সময়ই কেটে যায় সৈকতে সৈকতে। অসাধারণ সব সূর্যাস্ত দেখা যায়। সন্ধ্যায় মুরুদেশ্বর আলোকমালায় সেজে ওঠে। গোপুরমে মঙ্গলারতি হয়।

কাছেই বাইলুর সৈকত। মুরুদেশ্বর থেকে দূরত্ব ৭ কিলোমিটার। বাইলুর গ্রামটিও বেড়িয়ে৩ দেখতে পারেন। মুরুদেশ্বর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে আরেকটি সুন্দর সৈকত, নাখুদা বিচ। মুরুদেশ্বর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে বহু পুরনো ভাটকল শহরটি বেড়িয়ে নেওয়া যায়।
হাতে সময় থাকলে কর্নাটকের শিবমোজ্ঞা জেলায় যোগ জলপ্রপাত দেখে আসতে পারেন। মুরুদেশ্বর থেকে ৯০ কিলোমিটার। ভারতের দীর্ঘতম জলপ্রপাত। পশ্চিমঘাট পর্বতমালার মধ্য থেকে জন্ম নিয়ে শরাবতী নদী পাহাড়ের ৮২৯ ফুট উচ্চতা থেকে ঝাঁপিয়ে পড়েছে চারটি ধারায়। বর্ষার মরশুমে তার ভয়ঙ্কর সুন্দর রুপ।

 

মুরুদেশ্বর থেকে গোকর্ণ সড়কপথে ৭৮ কিলোমিটার। শুধু গোকর্ণতেই পরপর অনেকগুলো নয়নাভিরাম সৈকত রয়েছে। সবগুলিতে যাওয়া সম্ভব না হলেও গোকর্ণ বিচ, ওম বিচ, হাফমুন বিচ, কুডলে বিচ এবং প্যারাডাইস বিচ দেখুন, মন ভরে যাবে। এ ছাড়াও আছে নির্বার্ণ বিচ, স্মল হেল বিচ, বেলেকন বিচ। মুরুদেশ্বর থেকে মন্দিরনগরী উদুপি ১০০ কিলোমিটার। উদুপির মালপে সৈকত থেকে যাওয়া যায় আরব সাগরের সেন্ট মেরিজ আইল্যান্ডে।

 

নেত্রানী দ্বিপ
মুরুদেশ্বর এবং ভাটকলের অন্যান্য সৈকত থেকে দূরে আরব সাগরের মধ্যে দেখা যায় একটি ছোট্ট দ্বীপ। মুরুদেশ্বর সৈকত থেকে জলপথে ওই দ্বীপের দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার। এটি নেত্রানী দ্বীপ। পিজিয়ন আইল্যান্ড নামেও পরিচিত। সৈকত থেকে বোটে করে দ্বীপে পোঁছতে কমবেশি ঘন্টা দেড়েক সময় লাগে।

এই নেত্রানী দ্বীপটিকে বেড় দিয়ে রয়েছে প্রবালের প্রাচীর। সেই প্রবাল রাজ্যে খেলে বেড়ায় রং-বেরঙের সামুদ্রিক মাছ। সে এক স্বপ্নের জগৎ।

ভারতে স্কুবা ডাইভিং ও স্নরকেলিংয়ের এক বিশেষ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে নেত্রানী। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে এই নেত্রানীতেই আয়োজিত হয়েছিল দেশের প্রথম স্কুবা ফেস্টিভ্যাল। নেত্রানীতে স্কুবা ডাইভিং ও স্নরকেলিং চলে মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে মে মাসের শেষ পর্যন্ত।

সুইমার ও নন-সুইমার উভয়ের জন্যই স্কুবা ডাইভিং-এর ব্যবস্থা করে থাকে প্রফেশনাল এসোসিয়েশন অফ ডাইভিং ইন্সট্রাক্টরস (পি এ ডি আই) কর্তৃক অনুমোদিত সংস্থা নেত্রানী এডভেঞ্চারস। ঠিকানা: নেত্রানী অ্যডভেঞ্চারস,টেম্পল রোড, মুরুদেশ্বর,ভাটকল, কর্ণাটক-৫৮১৩৫০। ফোন: ৯৯০০৪৩১১১১, ৯৯১৬৫৫৪৪২২।

 

যাওয়ার পথ
কলকাতা থেকে ট্রেনে ম্যাঙ্গালোর। সেখান থেকে সড়কপথে মুরুদেশ্বর ১৬৩ কিলোমিটার। সাঁতরাগাছি-ম্যাঙ্গালোর বিবেক এক্সপ্রেস সাঁতরাগাছি থেকে ছেড়ে তৃতীয় দিন সকালে ম্যাঙ্গালোর পৌঁছোয়। চাইলে ম্যাঙ্গালোর থেকে ট্রেনেও মুরুদেশ্বর যাওয়া যায়। ট্রেনপথে ম্যাঙ্গালোর-মুরুদেশ্বর দূরত্ব ২৬১ কিলোমিটার। নেত্রাবতী এক্সপ্রেস,মৎস্যগন্ধা এক্সপ্রেস,কারওয়ার এক্সপ্রেস,মারগাওঁ এক্সপ্রেস প্রভৃতি ট্রেন মুরুদেশ্বর যায়। ব্যাঙ্গালোর থেকে সড়কপথে মুরুদেশ্বরের দূরত্ব প্রায় ৫০০ কিলোমিটার। ম্যাঙ্গালোর এয়ারপোর্ট মুরুদেশ্বরের নিকটতম বিমানবন্দর।

থাকার ব্যবস্থা
হোটেল মুরুদেশ্বর ইন্টারন্যাশনাল – ফোন : ৯৩৪৩৩৯২৭৭৭। শ্রীবিনায়ক রেসিডেন্সি -ফোন : ৯৫৩৫৯৬১৪৫৫। আর এন এস রেসিডেন্সি-ফোন : ৮৩৮৫২৬৮৯০১। কামাথ যাত্রী নিবাস-ফোন : ৯৪৪৮৩১৮৪৭১, ৯৫৩৮৭৩৭৭৭৮। আরিয়ানা গেস্ট হাউস-ফোন : ৯৮৪৪০২২৯১৫।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *