Follow us
Search
Close this search box.

পশ্চিম ওড়িশার বন্য সম্বলপুর

পশ্চিম ওড়িশার বন্য সম্বলপুর

ওড়িশার পশ্চিমপ্রান্তে সম্বলপুর জেলায় ভ্রমণরসিকদের জন্য রয়েছে অনেক মণিমুক্তো। মহানদীর তীরে সবুজে ঘেরা সম্বলপুর শহরটি ওড়িশার পঞ্চম বৃহত্তম শহর। অরণ্য, অনুচ্চ সব পাহাড়, নদী, জলাধার, ওয়াটার স্পোর্টসের ব্যবস্থা, মন্দির, আদিবাসী সংস্কৃতি, ঐতিহ্যমণ্ডিত হস্তশিল্প, সব মিলিয়ে ওড়িশার সম্বলপুর ভ্রমণার্থীদের আবিষ্কারের অপেক্ষায় রয়েছে।

মা সম্বলেশ্বরী মন্দির

জগন্নাথদেবের রাজ্যপাটের পাশাপাশি ওড়িশা জুড়েই মন্দিরের ছড়াছড়ি। ব্যতিক্রম নয় সম্বলপুরও। মা সম্বলেশ্বরী এখানে প্রায় কত্রী-সম আসনে রয়েছেন। সম্বলপুর শহরেই মহানদীর তীরে মা সম্বলেশ্বরীর মন্দির। চৌহান রাজবংশের প্রথম রাজা বলরাম দেব ষোড়শ শতকে মন্দিরটি স্থাপন করেছিলেন। কালক্রমে চৌহানদের স্থাপত্য রীতির একটা ঘরানা তৈরি হয়েছিল। আঞ্চলিক সংস্কৃতির ধারায় মিশে আছে এই দেবস্থান। সন্ধ্যায় মন্দিরে লাইট ও সাউন্ড শো আয়োজিত হয়।

 

হিরাকুদ বাঁধ

মূল সম্বলপুর শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার। মহানদীর ওপর ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ হিরাকুদ বাঁধ। বিপুল জলরাশি। বিশাল এক উন্মুক্ত পরিবেশ। আকাশে শতাধিক প্রজাতির পাখি ওড়াউড়ি করে এখানে। জলে অন্ত ত ৫০ রকমের মাছ আছে। ২০২১ সালে হিরাকুদ বাঁধ এলাকা রামসর সাইট ঘোষিত হয়। অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের ব্যবস্থা আছে। প্যারাসেইলিং, জেট স্কি, স্পিড বোট, কায়াকিং ইত্যাদি।

ডেব্রিগড় অভয়ারণ্যঃ

হিরাকুদ ড্যাম-সংলগ্ন ডেব্রিগড়ের অরণ্য আরেক গন্তব্য। জল-জঙ্গলের সঙ্গত বলা চলে। অরণ্যাঞ্চল বড়গড় জেলার অন্তুর্গত। গাড়িতে জঙ্গল সাফারির ব্যবস্থা আছে। বাইসন, চিত্রল হরিণ, লেপার্ড, হায়না প্রভৃতির মতো নানা জন্তুর আবাস ডেব্রিগড় অভয়ারণ্য।

সম্বলপুরী শাড়ি

সম্বলপুর ও বড়গড়, ঝড়সুগুড়া, সুন্দরগড়, বোলাঙ্গির প্রভৃতি অঞ্চলগুলিতে বয়নশিল্পের একটি ঐতিহ্যশালী ঘরানা গড়ে উঠেছে দীর্ঘকাল ধরে। সম্বলপুরী শাড়ি সুখ্যাত। সোনপুরী, বাপতা, বোমকাই, বরপালি শাড়ি সম্মিলিত ভাবে সম্বলপুরী শাড়ির ঘরানার অন্তুর্গত।

খাবারদাবার

আধুনিক খাবারদাবার হিসেবে প্রচলিত সব খাদ্যই পাওয়া যাবে সম্বলপুরে। রসিকজনেরা গ্রীষ্মে চেখে দেখতে পারেন পাখালা ভাত তথা সম্বলপুরী পান্তাভাত, আলু-বাইগান ঝোল, আঞ্চলিক পদ্ধতিতে ভাজা মাছ, পানাসা তরকারি (সম্বলপুরী ঘরানায় রান্না এঁচোড়), আমিষা ঝোল (সম্বলপুরী মুরগির ঝোল) ইত্যাদি।

সম্বলপুর আরও অনেক কিছু। বেড়িয়ে দেখতে পারেন গুড়গুড়া ঝরনা, জওহর উদ্যান ও গান্ধি মিনারের মধ্যে রোপওয়ে, হুমা গ্রামের বিমলেশ্বর শিব মন্দির, মহানদীর তীরে মৎসজীবীদের আরাধ্যা দেবী ঘন্টেশ্বরীর মন্দির, ওড়িশা ললিতকলা অ্যাকাডেমি রিজিওনাল আর্ট গ্যালারি(গৌরীশঙ্কর সাহানি পার্ক, বড়বাজার, সম্বলপুর)। আঞ্চলিক ভাষা, সুর ও ছন্দ, জীবনযাপনে লালিত সংস্কৃতির ছোঁয়া অনুভব করবেন।

 

যাওয়ার পথ

সম্বলপুর তথা ক্ষেত্রপুর, সম্বলপুর রোড, হিরাকুদ ও সম্বলপুর সিটি, চারটি রেল স্টেশন রয়েছে সম্বলপুরে। হাওড়া থেকে ১৮০০৫-সম্বলেশ্বরী এক্সপ্রেস, ২২৮৬১-কে বি জে ইস্পাত এক্সপ্রেস, ১২৮৭১-টি আই জি ইস্পাত এক্সপ্রেস, ২০৮৩১-মহিমা গোঁসাই এক্সপ্রেস সম্বলপুর যাচ্ছে।

নিকটবর্তী এয়ারপোর্ট বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট, রায়পুর (২৬৫ কিলোমিটার), বিজু পট্টনায়েক ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট (৩০০ কিলোমিটার)।
৪২ নম্বর জাতীয় সড়ক ভুবনেশ্বর ও সম্বলপুরের মধ্যে যোগাযোগ ঘটিয়েছে।

থাকার ব্যবস্থা

পান্থনিবাস
(ওড়িশা টুরিজম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন)
ফোনঃ 0663-2411282/ 0663-2411296

হোটেল কোনার্ক
ফোনঃ 0663-2545845

হোটেল সুজাতা
ফোনঃ 0663-2400403
সম্বলপুর লজ
ফোনঃ 0663-2404320

ইন্দ্রপুরী গেস্টহাউস
ফোনঃ 0663–2521712

সম্বলপুর জেলা টুরিস্ট অফিস, ফোনঃ 0663-2411118

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *