Follow us
Search
Close this search box.

হিমাচল ভ্রমণের সূচিতে থাকুক রকছাম

হিমাচল ভ্রমণের সূচিতে থাকুক রকছাম

হিমাচল প্রদেশের আপেলবাগিচায় ঘেরা ছোট্ট গ্রাম রকছাম, যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা। সারাহান থেকে ১০৭ কিলোমিটার। রকছাম যাওয়ার সেরা সময় এপ্রিল-মে মাস। সারাহান, সাংলার সঙ্গে জুড়ে নেওয়া যায় রকছামকে। সেই হিমাচল ভ্রমণে কীভাবে বেড়াবেন, কোথায় কোথায় যাবেন, কীভাবে যাবেন, সে-সব তথ্য-সহ ভ্রমণ পরিকল্পনাটি তৈরি করেছেন তুষার পাত্র

কীভাবে যাবেন

হাওড়া থেকে কালকা মেলে চণ্ডীগড় অথবা কালকা। চণ্ডীগড় থেকে গাড়িতে বা কলকা থেকে শিবালিক এক্সপ্রসে সিমলা। ওখান থেকে গাড়িতে সারাহান ও রকছাম-সহ অন্যত্র।

কোথায় কোথায় বেড়াবেন

সিমলা, সারাহান, রকছাম, সাংলা, ছিটকুল, রিকংপিও এবং কল্পা (কিন্নর কৈলাস)।

কীভাবে বেড়াবেন

প্রথম দিন : হাওড়া থেকে সন্ধ্যে ৭.৪০মিনিটের ১২৩১১ আপ কালকা মেলে কালকার উদ্দেশ্য রওনা।

দ্বিতীয় দিন: ট্রেনে।

তৃতীয়_দিন : ভোরে কালকায় নেমে ধরুন ৫.৪৫ মিনিটের শিবালিক এক্সপ্রেস। ট্রেন সিমলায় পৌঁছবে ১০.৩৫-এ। চণ্ডীগড়ে নেমে গাড়িতে সিমলায় পৌঁছতে পারেন। সিমলায় হোটেলের ছড়াছড়ি। চাইলে থাকতে পারেন সিমলা কালিবাড়িতেও। এক্ষেত্রে আগে থেকে চিঠি লিখে সম্মতি নিতে হয়। বিকেলে বেরিয়ে সিমলা কালিবাড়ি ঘুরে চলে আসুন সিমলা মলে। চাইলে সন্ধ্যেবেলায় বাজারে গিয়ে কেনাকাটা করতে পারেন।

চতুর্থ দিন : আজ সকালে সিমলা থেকে রওনা হয়ে আমরা যাব সারাহান। দূরত্ব ১৭৫কিলোমিটার। সময় লাগবে কম করে সাত ঘন্টা। সিমলা থেকে সরকারি বাস আছে। এই পথে প্রথমেই পড়বে কুফরি। অল্প সময়ের জন্যে হলেও নেমে দেখতে পারেন। জায়গাটার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসাধারণ। দেখে নিতে পারেন সেই জায়গাটা যেখানে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ঐতিহাসিক সিমলা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সারাহানের প্রধান আকর্ষন ভীমকালী মন্দির এবং জায়গাটার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এখানে মন্দিরের অতিথিশালা ছাড়াও অনেক হোটেল আছে। বিকেলে হোটেলে পৌঁছে মন্দিরে সন্ধ্যা-আরতি দেখতে পারেন।

পঞ্চম দিন : সারাহানের ভীমকালী মন্দির ৫১ সতীপিঠের অন্যতম। সময় নিয়ে আজ মন্দিরে পুজো দিতে পারেন। ঘুরে দেখুন কাঠের তৈরি মন্দিরের অসাধারণ স্থাপত্যশৈলী। একটি ছোট গ্ৰাম এই সারাহান। সারাদিন পায়ে পায়ে দেখে নিতে পারেন গ্ৰামটা। মন্দিরের খুব কাছেই রয়েছে বুশাহার রাজবাড়ি। ঘুরে আসুন একবার। চারপাশের প্রাকৃতিক শোভা দেখতে দেখতে কী ভাবে দিনটা কেটে যাবে বুঝতেই পারবেন না।

ষষ্ঠ দিন: আজ আমরা ব্রেকফাস্ট করে বেরিয়ে পড়ব রকছামের উদ্দেশে। দূরত্ব ১০৭ কিলোমিটার। সময় লাগে সাড়ে পাঁচ ঘন্টার মতো। যাওয়ার পথে আমরা ঘুরে দেখব সাংলার কামরু ফোর্ট। এটি সাংলা থেকে দু’কিলোমিটার দূরে। প্রায় দেড়হাজার সিঁড়ি বেয়ে ফোর্টে উঠতে হয়। খুব কষ্টসাধ্য। ফোর্টে প্রবেশ নিষেধ। পাশের মন্দিরে পুজো দিতে পারেন। এখান থেকে দেখা সাংলা ভ্যালি এককথায় অসাধারণ। আর সাংলায় আসার রাস্তার সৌন্দর্য চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। বিকেলের আগেই পৌঁছে যাবেন রকছাম। খুব ছোট্ট এক পাহাড়ি জনপদ এই রকছাম।নির্জনতা আর এক অদ্ভুত নৈসর্গিক পরিবেশ রকছামের মূল আকর্ষণ। আপেল বাগানে ঘেরা এই রকছামের পাশ দিয়ে কুলকুল শব্দে বয়ে চলেছে বিয়াস নদী। গুটিকয়েক হোটেল আর হোমস্টে নিয়ে রকছাম আপনাকে স্বাগত জানাতে তৈরি। এখানে একটা দিন থাকতে পারলে তা সারা জীবনের অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে। রকছামে থাকতে হলে আগে থেকে হোটেল বুক করে যাওয়া ভালো।

সপ্তম দিন : আজ আমরা ছিটকুল আর রিকংপিও দেখে পৌঁছে যাব কল্পা। রকছাম থেকে ছিটকুল আধ ঘন্টার রাস্তা। এ পথে ছিটকুল ভারতের শেষ গ্ৰাম। ঘন্টা দু’য়েক সময় যথেষ্ট ছিটকুল ঘুরে দেখার জন্যে। খুব ছোট গ্ৰাম । ছিটকুলের নৈসর্গিক দৃশ্য অসাধারণ। সারা জীবনের সঞ্চয়। প্রাণ ভরে ছবি তুলুন। গ্ৰামের মধ্যে একটা মন্দির আছে। কোনও হোটেলের সামনে বাংলায় ‘আলু-পোস্ত’ লেখা দেখলে অবাক হবেন না। এখান থেকে সোজা রিকংপিও। সেখানে খানিকটা সময়ের জন্য যাত্রাবিরতি। কল্পার জেলাসদর এই রিকংপিও। দোকানপাট, অফিসকাছারি নিয়ে জমজমাট পাহাড়ি শহর রিকংপিও। শহরটার আলাদা একটা সৌন্দর্য আছে। যে দিকে তাকাবেন বরফে ঢাকা পাহাড়। বিকেলে পৌঁছে যাবেন কল্পা। হোটেলে চেক ইন করতে মন চাইবে না। কারন আপনার সামনে তখন শুধুই কিন্নর কৈলাস।

অষ্টম দিন : আজকের দিনটা শুধু কল্পার জন্যে। এখানকার সব হোটেল থেকেই দেখা যায় কিন্নর কৈলাস। এক বার কল্পায় এলে মনে হবে জীবন সার্থক। কল্পার সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।আমরা সারা দিনে ঘুরে দেখব কোঠি গ্ৰামে চণ্ডিকা দেবী মন্দির, সুইসাইড পয়েন্ট, কল্পা মনাস্ট্রি এবং নারায়ণ নাগিনী মন্দির।বাকি সময়টা কেটে যাবে পাহাড়ের দিকে তাকিয়েই।

নবম_দিন: আজকের দিনটা খানিক কঠিন। কল্পা থেকে সিমলায় ফেরা। ২৪০ কিলোমিটার রাস্তা। সময় লাগবে দশ ঘণ্টা। পাহাড়ি রাস্তায় এই জার্নিটা কষ্টকর। তাই অনেকেই এই পথে রামপুরে রাত্রিবাস করেন। আমি বলবো একটু কষ্ট হলেও সিমলায় ফিরে যাওয়া ভালো। বিশ্রাম নিন সিমলায়।

দশম দিন: খুব ক্লান্ত থাকায় আজ ঘুম ভাঙ্গতে দেরি হবে। সিমলায় কিছু কেনাকাটা বাকি থাকলে আজ করে নিন। দুপুরে লাঞ্চ করে এক ঘুম দিয়ে বিকেলে রওনা দেওয়া কালকার উদ্দেশে। সিমলা থেকে কালকা যাওযার প্রচুর বাস পাওয়া যায়। রাস্তা খুব ভালো। কালকা থেকে রাত ১১.৫৫ মিনিটে ১২৩১২ ডাউন কালকা-হাওড়া মেলে ফিরতি যাত্রা শুরু হবে।
একাদশতম দিন: ট্রেনে

দ্বাদশ দিন :- সকাল ৮.০৫ এ হাওড়ায়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *