বাঁকুড়া জেলার দক্ষিণ সীমান্তে সবুজের চাদরে ঢাকা এক ছোট্ট জনপদ ঝিলিমিলি। এই ঝিলিমিলিতেই শালের জঙ্গলের মধ্যে টিলার উপরে রাণীবাঁধ পঞ্চায়েত সমিতির
উদ্যোগে গড়ে উঠেছে রিমিল প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র। রিমিল লজ তার মধ্যমণি। সবুজের ছায়া মাখা রিমিল তার প্রেমে পড়তে বাধ্য করে।
প্রান ভরে অক্সিজেন নিয়ে দু-একটা দিন অনায়াসে কাটাতে চাইলে সবুজ জঙ্গল আর লাল মাটির ঝিলিমিলিতে একবার আসতে হয়।। নিখাদ বিশ্রাম। প্রকৃতির মাঝে রিমিল লজের বারান্দায় কিংবা নীচে খাটিয়ায় বসে গল্প করতে করতে দিন কেটে যায়। গাছের ফাঁকে ফাঁকে আলো-ছায়ার খেলা চলে। সন্ধ্যা নামলে জংলি ঝিঁঝিঁ পোকার কলতানে মুখরিত গোটা অঞ্চল। কখনো দূর থেকে ভেসে আসবে মাদলের বোল। শীত ও বর্ষায় ঝিলিমিলি চমৎকার।
জঙ্গলের মধ্যে হলেও আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধাই রিমিলে মজুদ। ছোটদের জন্য রয়েছে বিনোদনের ব্যবস্থা। থাকার জন্যে আছে ট্রি হাউস, টেন্ট হাউস, ডিলাক্স রুম ও কটেজ। খাওয়াদাওয়ার জন্য রয়েছে রিমিলের নিজস্ব রেস্তোরাঁ’সুরুচি’। লজের সর্বত্র জঙ্গলমহলের আন্তরিকতার ছোঁয়া। ঝিলিমিলির রিমিলকে কেন্দ্র করে বেড়িয়ে নেওয়া যায় মুকুটমণিপুর (২৮কিমি), সুতান (২০কিমি) এবং তালবেড়িয়া ড্যাম (৪কিমি)। চাইলে ঝাড়গ্ৰাম এবং বেলপাহাড়িকে যুক্ত করে নেওয়া যেতে পারে পার এ ভ্রমণে।
রিমিল লজ এলাকা থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে রাউতাড়া গ্রামের শেষ প্রান্তে তালবেড়িয়া ড্যাম। সবুজ টিলা আর জঙ্গলের মধ্যে তালবেড়িয়ার জলাধার। ড্যামের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত চলে গেছে পিচঢালা রাস্তা। মাঝে লকগেট। চাইলে নৌকায় ভেসে বেড়ানো যায় জলাধারে। নির্জন নীল-সবুজের মধ্যে কোথা দিয়ে সময় বয়ে যায়। তালবেড়িয়ার বিশাল জলাধারে সূর্যোদয়ের দৃশ্য খুব সুন্দর। বর্ষায় তালবেড়িয়া সবচেয়ে সুন্দর।
ঝিলিমিলি, সঙ্গে সুতানের সবুজ এবং মুকুটমণিপুর আর তালবেড়িয়া ড্যাম। স্বল্প সময়ের এক চমৎকার ভ্রমণ সূচি।
যাওয়ার পথ
বাঁকুড়া শহর থেকে ঝিলিমিলির দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার। কলকাতা থেকে গাড়িতে জাতীয় সড়ক ধরে খড়্গপুর হয়ে চলে আসুন ঝাড়গ্ৰাম। ট্রেনেও আসা যায় ঝাড়গ্ৰাম। ঝাড়গ্ৰাম থেকে বিনপুর, শিলদা, বেলপাহাড়ি হয়ে পৌঁছে যান রিমিলে। ঝাড়গ্ৰাম থেকে দূরত্ব ৬৫ কিলোমিটার। কলকাতা থেকে খড়্গপুর না গিয়ে মেদিনীপুর, ধেড়ুয়া হয়ে ঝাড়গ্ৰাম যাওয়া যায়। এ পথের দূরত্ব কিছুটা কম। কলকাতা থেকে ঝিলিমিলি নাইট সার্ভিস বাস আছে।
রিমিল লজের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর: ৮৫৩৮৮৩৪০৩১।
ফটোঃ তুষার পাত্র।