Follow us
Search
Close this search box.

এক যাত্রায় মধ্যপ্রদেশের ছয় ঠিকানায়

এক যাত্রায় মধ্যপ্রদেশের ছয় ঠিকানায়

ভারতের মধ্যস্থলে অবস্থিত মধ্যপ্রদেশ এ দেশের পর্যটন মানচিত্রে একটি বৈচিত্রময় ভ্রমণ-অভিমুখ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গেছে অনেক আগেই। এই দেশটিকে দেখতে চাইলে মধ্যপ্রদেশকেও দেখতে হবে। এক যাত্রায় বৃহৎ এই রাজ্যটির সবক’টি নামী পর্যটন কেন্দ্র বেড়িয়ে আসার জন্য যথেষ্ট সময়ের দরকার। সেই ভ্রমণ যথেষ্ট খরচসাপেক্ষও বটে। এবারের টুর প্ল্যানে মধ্যপ্রদেশের কয়েকটি বিশিষ্ট পর্যটন কেন্দ্র বাছাই করে নিয়ে বেড়ানোর সুচিন্তিত পরিকল্পনাটি তৈরি করেছেন তুষার পাত্র।

কীভাবে যাবেন

হাওড়া থেকে ট্রেনে সাতনা। সাতনা থেকে গাড়িতে খাজুরাহো। খাজুরাহো থেকে বান্ধবগড়। বান্ধবগড় থেকে অমরকন্টক। অমরকন্টক থেকে জব্বলপুর এবং জব্বলপুর থেকে পাঁচমারি।

কী কী দেখবেন

খাজুরাহো,বান্ধবগড়,অমরকন্টক,জব্বলপুর পাঁচমারি এবং সাঁচী।

টুর প্ল্যান

প্রথম দিনঃ হাওড়া থেকে রাত ৯ঃ৫৫ মিনিটের ১২৩২১ হাওড়া-মুম্বই মেলে সাতনার উদ্দেশে যাত্রা। সাতনা মধ্যপ্রদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপাল থেকে সড়কপথে সাতনার দূরত্ব ৫০০ কিলোমিটার।

সাতনা

দ্বিতীয় দিনঃ দুপুর ২.৫০ মিনিট নাগাদ সাতনায় নেমে গাড়িতে খাজুরাহো। সাতনা থেকে খাজুরাহো ১১৭ কিলোমিটার। খাজুরাহোতে রাত্রিবাস।

তৃতীয় দিনঃ সারাদিন খাজুরাহোর মন্দির দর্শন। ছোট ছোট পাহাড়ে ঘেরা একটি উপত্যকার মধ্যে খাজুরাহোর মন্দিরগুচ্ছের আবস্থান। আদতে ছিল ৮৫টি মন্দির। এখন রয়েছে ২২টি মন্দির। এই ২২টি মন্দির বিশেষভাবে সংরক্ষিত হচ্ছে। এ দিনও খাজুরাহোতেই রাত্রিবাস।

খাজুরাহো

চতুর্থ দিনঃ খাজুরাহো থেকে বান্ধবগড়ের উদ্দেশে যাত্রা। দূরত্ব ২২৭ কিলোমিটার। বান্ধবগড়ে রাত্রিবাস।

পঞ্চম দিনঃ সকালে বান্ধবগড়ে জঙ্গল সাফারি। ভারতের অন্যতম বৃহৎ জাতীয় উদ্যান ও টাইগার রিজার্ভ বান্ধবগড়। ৭১৬ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বান্ধবগড় অরণ্যের কোর অঞ্চল। নানা বন্যপ্রাণীর আবাস এই আরণ্য। প্রধান আকর্ষণ বাঘ। লাঞ্চের পর অমরকন্টকের উদ্দেশ্যে যাত্রা। বান্ধবগড় থেকে দূরত্ব ১৮২ কিলোমিটার। অমরকন্টকে রাত্রিবাস।

বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যান ও টাইগার রিজার্ভ

ষষ্ঠ দিনঃ আজ দেখব অমরকন্টকের দর্শনীয় স্থানগুলো। দর্শনীয় জায়গাগুলো হল অমরকন্টকের মূল মন্দির, দুধ ধারা,কপিল ধারা, জৈন মন্দির,মা কি বাগিয়া,শোনমূড়া, শ্রী যন্ত্র মহামেরু মন্দির ইত্যাদি।

দুধধারা

সপ্তম দিনঃ সকালে প্রাতরাশের পর জব্বলপুরের উদ্দেশে যাত্রা। দূরত্ব ২৩০ কিলোমিটার। জব্বলপুরে রাত্রিবাস।

অষ্টম দিনঃ জব্বলপুরে অবশ্যই দেখব মার্বেল রক ও ধুঁয়াধার জলপ্রপাত। নর্মদা নদীর ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ গর্জের দু’ধারে নদীর জলপ্রবাহে ক্ষয়কার্যের ফলে তৈরি হয়েছে মার্বেল পাথরের নানা আকৃতি। প্রকৃতির এক আশ্চর্য সৃষ্টি। ভেড়াঘাট সেই অপূর্ব দৃশ্য চাক্ষুষ করার আদর্শ জায়গা। গাইড নিয়ে নৌকায় নদীবক্ষে বেড়ানো যায়। একটি টিলার উপরে উঠে দেখে আসতে পারেন চৌষট্টি যোগিনী মন্দির। এই ভেড়াঘাটেই দেখবেন নর্মদা নদী থেকে সৃষ্ট ধুঁয়াধার জলপ্রপাত। এ দিনও জব্বলপুরে রাত্রিবাস।

ধুঁয়াধার জলপ্রপাত

নবম দিনঃ আজ আমরা জব্বলপুর থেকে যাব পাঁচমারি। দূরত্ব ২৬০ কিলোমিটার। পাঁচমারিতে রাত্রিবাস।

দশম দিনঃ পাঁচমারিকে বলা হয় ‘মধ্যপ্রদেশের কাশ্মীর’। ‘সাতপুরার রানী’ নামেও খ্যাত ৩৬০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত হিল স্টেশন পাঁচমারি। সাধারণত উষ্ণ আবহাওয়ার মধ্যপ্রদেশে পাঁচমারি অঞ্চলটি একটি ব্যতিক্রম। এখানে দেখবেন জটাশঙ্কর গুহা মন্দির,পঞ্চপাণ্ডব গুহা,পাঁচমারি লেক, বাইসন লজ ইন্টারপ্রিটেশন সেন্টার, প্রিয়দর্শিনী ভিউ পয়েন্ট, রজতপ্রপাত (জলপ্রপাত)। বাইসন লজ ইন্টারপ্রিটেশন সেন্টারে পাঁচমারির নানা প্রকার উদ্ভিদ ও জীবজন্তুর পরিচয় পাওয়া যাবে। রাত্রিবাস পাঁচমারিতে।

পাঁচমারি লেক

একাদশতম দিনঃ আজ পাঁচমারি থেকে যাব ভোপাল। সাঁচী স্তুপ দেখে পৌঁছাব ভোপাল । পাঁচমারি থেকে ভোপালের দূরত্ব ২৬০ কিলোমিটার। স্টেশনের কাছাকাছি কোন হোটেলে রাত্রিবাস।

ভোপাল

দ্বাদশতম দিনঃ ভোর ৪.১০ মিনিটে শিপ্রা এক্সপ্রসে হাওড়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা।

ত্রয়োদশতম দিনঃ সকাল ৬.৫০ মিনিট নাগাদ হাওড়া স্টেশন।

মধ্যপ্রদেশের এক শহর থেকে আরেক শহরে যাওয়ার জন্য বাস সার্ভিস পাবেন।

থাকার ব্যবস্থা

খাজুরাহোতেঃ ঝংকার, খাজুরাহো (মধ্যপ্রদেশ পর্যটনের হোটেল), ফোন ৭৬৮৬২-৭৪১৯৪। হোটেল হারমনি, ফোন ৯৪২৪৩-৪৩৭৩১। দি ললিত টেম্পল ভিউ খাজুরাহো, ফোন ৯৯৯৩০-৯২ ৬০০। ক্লার্কস খাজুরাহো, ফোন ৭৬৮৬২-৭৪০৩৮। গোল্ডেন টিউলিপ, ফোন ৭৬৮৬২-৭২৯৩২। হোটেল সূর্য খাজুরাহো, ফোন ৯৪২৫১-৪৬২০৩।

বান্ধবগড়েঃ ফোন হোয়াইট টাইগার ফরেস্ট লজ (মধ্যপ্রদেশ পর্যটনের হোটেল), ফোন ৯৬৪৪২-২৩৩৯০। টাইগার ট্রেলস রিসর্ট, ফোন ৭৬২৭২-৬৫৩২৫। মোগলি জঙ্গল রিসর্ট বান্ধবগড়, ফোন ৯৪২৫১-৫৬২৪৫। ওয়াইল্ড ফ্লাওয়ার রিসর্ট, ফোন ৮৯৫৯০-৯৪৫৪৯। বাঘেলা রিসর্ট, ফোন ৯৯২৬৬-৮৬৬৮৬। সাইনা টাইগার রিসর্ট, ৯৮২১৩-৯৫৩৯৮। হোটেল সাফারি রিজেন্সি, ফোন ৭৬৬২৪-২৩২৬২।

অমরকন্টকেঃ মধ্যপ্রদেশ পর্যটনের হলিডে হোমস, ফোন ৯৪২৪৭-৯৬৭৭৮। নর্মদা আনন্দম, ফোন ৭০০০৪-৫৮৩৫৮। হোটেল শ্রীমাতা সদন, ফোন ৯৬৩০৩-৭১৯৭৯। অমরকন্টক রিসর্ট, ৯১৩১৫-২০১৭৪। সর্বোদয়া বিশ্রাম গৃহ, ৯৪২৫৩-৩১১৯২।

জব্বলপুরেঃ মধ্যপ্রদেশ পর্যটনের কালচুরি রেসিডেন্সি, ফোন ৯৪২৪৭-৯৬৮৪২। মধ্যপ্রদেশ পর্যটনের মাইকাল রিসর্ট, বাগরী, ফোন ৮৭১৯৯-৬৩৩৪২। মধ্যপ্রদেশ পর্যটনের টুরিস্ট মোটেল, মান্দলা, ফোন ৯৪২৪৭-৯৬৮৪৮। হোটেল পোলো ম্যাক্স, জবলপুর, ফোন ৭৬১২৬-২৩৯৪৫। হোটেল শিখর প্যালেস, জবলপুর, ফোন ৭৬১২৬-২৯১৭১। বিজন মহল, ফোন ৭৬১৪০-৭৬৬৬৬।

পাঁচমারিতেঃ এম পি টি অমলতাস, পাঁচমারি, ফোন ৯১৩১৬-৩৬৩৪৩। এম পি টি চম্পক বাংলো, পাঁচমারি, ফোন ৯৪২৪৭-৯৬৭৯৪। এম পি টি ক্লাব ভিউ, পাঁচমারি, ফোন ৯৪২৯১-৯৭৯৯০। এম পি টি দেবদারু বাংলো, পাঁচমারি, ফোন ৯১৩১৬-৩৬৩৪৩। এম পি টি গ্লেন ভিউ, পাঁচমারি, ফোন ৯৪২৯১-৯৭৯৯০। এম পি টি নন্দনবন, পাঁচমারি, ফোন ৯৪২৪৭-৯৬৭৬৮।
এম পি টি=মধ্যপ্রদেশ টুরিজম।

ভোপালেঃ এম পি টি লেকভিউ রেসিডেন্সি, ফোন ৯৪২৪৭-৯৬৮১০। এম পি টি পলাশ রেসিডেন্সি, ফোন ৯৪২৪৭-৯৬৮৩১। হোটেল গোল্ডেন প্যালেস, ফোন ৭৫৫২৭-৪১২৪১। হোটেল সোনালী রিজেন্সি, ফোন ৭৫৫২৭-৪০৯৯০। হোটেল সিলভার ইন, ৭৫৫২৫-৯১১২৪। হোটেল পথিক ভোপাল, ফোন ৭৫৫৪২-৯৯০৩১।
ভোপাল স্টেশনের কাছে আরও হোটেল রয়েছে। ভোপাল পৌঁছে পছন্দসই কোনও হোটেল ঠিক করে নিতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *