Follow us
Search
Close this search box.

বাংলার পাঁচ ফার্মস্টে

বাংলার পাঁচ ফার্মস্টে

বাঁশবাড়ি ফার্মহাউস: 

দার্জিলিং থেকে বিজনবাড়ি দেড়ঘন্টার পথ। এখানেই পাহাড়, নদী, উপত্যকা আর গাঢ় সবুজ জঙ্গলে ঘেরা বাঁশবাড়ি ফার্মস। দার্জিলিংয়ের হৈচৈ যদি না-পসন্দ, তবে বাঁশবাড়ি চলে আসুন। দশ একর জমিজুড়ে ফরেস্ট ফার্ম । থাকার জন্য রয়েছে বাঁশ ও আঞ্চলিক নানা উপকরণ ব্যবহার করে তৈরি বাঁশবাড়ি ও লাক্সারি টেন্ট। বাকি জমিতে জৈব পদ্ধতিতে চাষ হয়। সযত্নে তৈরি লন আর প্রাকৃতিক অরন্যের সুন্দর মিলমিশ ঘটেছে বাঁশবাড়ি ফার্মসে। ওয়াটার ও ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা রয়েছে ফার্মস চত্বরে। প্লাস্টিক-মুক্ত গোটা ফার্মস চত্বর। সম্পূর্ণতই একটি পরিবেশবান্ধব ঠিকানা।

ছবিটি বাঁশবাড়িফার্ম ডট কম ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত।

খাওয়ার টেবিলে পাওয়া যাবে ফার্মের বাগানে উৎপাদিত শাক-সবজি দিয়ে তৈরি খাদ্য। নিজেদের মতো করে রান্না করে খেতে চাইলে ফার্মসের কিচেনে রান্নার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। খাদ্য-উপকরণের সরবরাহও পাবেন।

ছবিটি বাঁশবাড়িফার্ম ডট কম ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত।

চা নিয়ে ফার্মসের লনে বসুন। নানা পাখির দেখা পাবেন। ফার্মস চত্বরে হেঁটে বেড়ান। বাঁশবাড়ি ফার্মস থেকে ট্রেক করে চার কিলোমিটার দূরের চংটং চা-বাগানে চলে যেতে পারেন। এখানে চা চেখে দেখার সুযোগও রয়েছে। জৈবচাষের কলাকৌশল শিখতে পারেন ফার্মের বাগানে।

বাঁশবাড়ি ফার্মস থেকে ট্রেক করে কোলবুং বা মাঝিটার যেতে পারেন। চাষের খেত, অরণ্যের মধ্যে দিয়ে পথ। যাতায়াতে ৫-৬ ঘন্টা সময় লাগবে। চলার পথে একদিকে দেখবেন দার্জিলিং শহর, অন্যদিকে দেখবেন উন্নতশির কাঞ্চনজঙ্ঘা। ট্রেক করে যেতে পারেন রেলিং বাজার। অনেকটা পথ যেতে হবে নদীর ধার দিয়ে দিয়ে। যাওয়া ও ফিরে আসায় সময় লাগবে ৪ থেকে ৫ ঘন্টা। বাঁশবাড়ি থেকে সিংতাম টি এস্টেট হয়ে ট্রেকপথে চলে যেতে পারেন দার্জিলিং। মাউন্টেন বাইকিংয়ের সুযোগ আছে। পাহাড়ে চালানোর উপযোগী সাইকেল ভাড়া পাওয়া যাবে ফার্মস থেকে। বাঁশবাড়ি থেকে জোরথাং (১৬ কিলোমিটার) একটি জনপ্রিয় বাইকিং রুট।

থাকার ব্যবস্থা

থাকার জন্য বাঁশবাড়ি ফার্মসে রয়েছে ব্যলকনি-সহ ব্যাম্বু ইউনিট বা বাঁশবাড়ি (ভাড়া ৩৫০০ টাকা), লাক্সারি টেন্ট-১ (ভাড়া ৩০০০ টাকা), লাক্সারি টেন্ট-২ (ভাড়া ৩০০০ টাকা)।

ছবিটি বাঁশবাড়িফার্ম ডট কম ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত।

যাওয়ার পথ

এন জে পি থেকে গাড়ি ভাড়া করে সরাসরি বাঁশবাড়ি পৌঁছনো যাবে। সময় লাগবে সাড়ে ৩ থেকে ৪ ঘন্টা। শেয়ার গাড়িতে দার্জিলিং পৌঁছে সেখান থেকে প্রাইভেট গাড়িতে বাঁশবাড়ি পৌঁছাতে পারেন। সময় লাগবে দেড় ঘন্টা।

বড় মাঙ্গোয়া ফার্মহাউস:

দার্জিলিং জেলায় বড় মাঙ্গোয়া ও ছোট মাঙ্গোয়া যেন দুই সহোদরা গ্রাম। কমলালেবু উৎপাদনের জন্য খ্যাত তিস্তাপারের দুটি গ্রামই। পরিবেশবান্ধব ভ্রমণ ঠিকানা হিসেবে বড় মাঙ্গোয়া ও ছোট মাঙ্গোয়া দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। অক্টোবর-নভেম্বরে এই দুই গ্রাম কমলা আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে থাকে। তখন সমগ্র মাঙ্গোয়া এলাকায় বাগানে বাগানে কমলালেবুর বিপুল সম্ভার। তখন পাখিও প্রচুর, ঠোঁট বাড়ালেই টুসটুসে পাকা কমলালেবু পাওয়া যায় যে। তবে বছরের বিভিন্ন মরশুমে মাঙ্গোয়ার নানা রুপ। বেড়াতে যাওয়া যায় যে-কোনও সময়েই। বড় মাঙ্গোয়া থেকে তিস্তার রুপ অসাধারণ।

বড় মাঙ্গোয়া ফার্মহাউস

প্রকৃতিকে কোনওভাবে আঘাত করে নয়, বিকৃত করে নয়, বরং সাদরে গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের প্রাকৃতিক বৈশিষ্টগুলিকে সুপরিকল্পিত ভাবে ব্যবহার করে সেই অঞ্চল এবং আঞ্চলিক মানুষজনের উন্নতি এই সময়ের গঠনমূলক পর্যটনের দর্শন। দর্শনটিকে কাজে রূপায়িত করা কিন্তু কঠিন কাজ। সেই কঠিন কাজটিই করে বড় মাঙ্গোয়া ফার্মহাউস কর্তৃপক্ষ।
ভ্রমণপ্রিয় ও পরিবেশরক্ষায় নিবেদিত প্রাণ কয়েকজন সমমনস্ক মানুষ আন্তরিক প্রচেষ্টায় ২০০৫ সালে বড় মাঙ্গোয়ায় গড়ে তোলেন যথার্থই একটি খামারবাড়ি বা ফার্মহাউস। তারপর নিরলস প্রয়াসে, আঞ্চলিক মানুষজনকে সঙ্গী করে, ক্রমশ একটি মডেল ফার্মহাউস হয়ে উঠেছে এলাকাটি।


পাহাড়ের উপর চাষ-বাস। সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে শস্য, শাক-সব্জির চাষ হয়। ফার্মহাউস চত্বরের মধ্যেই রয়েছে পোলট্রি, ডেয়ারি ফার্ম, পশুপালন খামার। সবই উৎপাদিত হয় জৈব প্রক্রিয়ায়। ফার্মহাউসের মধ্যেই রয়েছে যোগা ও মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। আশেপাশের গ্রামগুলো থেকে ছেলেমেয়েরা আসে প্রশিক্ষণ নিতে। আছে একটি ছোট স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কচিকাঁচাদের জন্য আছে একটি ছোট স্কুলও। আর আছে আতিথিদের জন্য অকৃত্রিম প্রাকৃতিক পরিবেশে থাকার ছিমছাম ও আন্তরিক আয়োজন। আঞ্চলিক মানুষজন যুক্ত রয়েছেন ফার্মহাউসের নানা কাজের সঙ্গে। সব মিলিয়ে এক আধুনিক ও সৃষ্টিশীল পর্যটন আদর্শ আত্মস্থ করার আন্তরিক প্রয়াস লক্ষ্য করা যায় বড় মাঙ্গোয়া ফার্মহাউসে।

থাকার ব্যবস্থা

অতিথিদের থাকার জন্য ফার্মহাউসে রয়েছে প্রিমিয়াম ডবল বেড রুম (ভাডা ২০০০ টাকা) ও ডিলাক্স ট্রিপল বেড রুম (ভাডা ২৫০০ টাকা)। অতিরিক্ত একজন অতিথির জন্য প্রিমিয়াম ডবল বেড রুমের জন্য লাগবে ৪০০ টাকা, ডিলাক্স ট্রিপল বেড রুমের ক্ষেত্রে লাগবে ৫০০ টাকা। ঘরভাড়ার ওপর ১০ শতাংশ কর যুক্ত হবে।

খাওয়াদাওয়াঃ ক্ষতিকর রাসায়নিকমুক্ত নানা খাদ্যের পদ পাওয়া যাবে খাওয়ার টেবিলে। ফার্মের জমিতে উৎপাদিত সবজি, পোলট্রি ও গোটারিতে উৎপাদিত ডিম, মাংস থাকবে খাওয়ার পদে। ডেয়ারির খাদ্য উপকরণ, মাংস, ডিম, সবই জৈব পদ্ধতিতে উৎপাদিত হয়। দিনপ্রতি মাথাপিছু খাওয়ার খরচ ৬০০ টাকা।

কী কী করতে পারেন

ফার্মহাউসের মধ্যে ঘুরেফিরে চাষ-আবাদ দেখতে পারেন। পায়ে হেঁটে লোয়ার মাঙ্গোয়া, আপার মাঙ্গোয়া, টকলিং, সোরেংয়ের মতো গ্রামগুলি থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেন। টকলিংয়ে রয়েছে সুন্দর একটি মনাস্ট্রি। এটি তামাং গোষ্টীর মনাস্ট্রি। শুদ্ধ প্রকৃতির মধ্যে দিয়ে এই প্রাণদায়ী ভ্রমণ ভালো লাগবে। দেখে আসুন বড় মাঙ্গোয়ার নামকরা কমলালেবুর বাগিচা। বড় মাঙ্গোয়া থেকে তিনচুলে সানরাইজ পয়েন্ট ৯ কিলোমিটার। তিনচুলে সানরাইজ পয়েন্ট থেকে আশ্চর্য করা সূর্যোদয়ের সাক্ষী থাকা একটা বড় প্রাপ্তি। বড় মাঙ্গোয়া থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে উপত্যকা ঘিরে পেশক ও লপচু চা বাগান। চাইলে তিস্তা বা রঙ্গীত নদীতে রফটিং করা যায়। ট্রেক করা যায় পাহাড়, জঙ্গলের পথে। পাখি পর্যবেক্ষণে আগ্রহীদের কাছেও বড় মাঙ্গোয়া আকর্ষণীয় স্পট। সবমিলিয়ে, একঘেয়ে ব্যস্ত জীবনে বড় মাঙ্গোয়ার প্রকৃতি নিশ্চিতভাবেই ভালোলাগার বোধ এনে দেবে আপনার বাহির ও অন্তরে।

 

 

এখানে কিনতে পাবেন স্কোয়াশ, ফলের রসের পানীয়, আচার প্রভৃতি। আগ্রহ থাকলে যোগা, মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে পারেন। চাইলে ট্রেক করে যেতে পারেন ছোট মাঙ্গোয়া বা পেশক টি গার্ডেন। তিস্তাবাজার থেকে কিনতে পারেন পছন্দের হস্তশিল্প সামগ্রী।

যাওয়ার পথ

বড় মাঙ্গোয়া এন জে পি থেকে ৬০ কিলোমিটার, শিলিগুড়ি থেকে ৫৫ কিলোমিটার। তিস্তা বাজার থেকে বাঁ-দিকের রাস্তায় খানিকটা এগিয়ে বড় মাঙ্গোয়া। এন জে পি বা শিলিগুড়ি থেকে ২ থেকে সোয়া ২ ঘন্টার মধ্যে পৌঁছে যাওয়া যায়। গাড়ি থেকে নেমে মিনিট দশেক হেঁটে ফার্মহাউসে প্রবেশ করতে হবে। খেত, সব্জির বাগানের মধ্যে দিয়ে সেই পথ। ওইটুকু হাঁটতে ভালোই লাগবে। মাল বহনের জন্য ফার্মহাউসের পোর্টার উপস্থিত থাকবে।
এন জে পি-বড় মাঙ্গোয়া যাতায়াতের ক্ষেত্রে গাড়ির ব্যবস্থার জন্য ফার্মহাউস থেকে সহায়তা করা হয়, নির্দিষ্ট ভাড়ার বিনিময়ে। ফার্মহাউস থেকে দিনে দিনে দার্জিলিং, কালিম্পং, লাভা বেড়িয়ে আসা যায়।

তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন বড় মাঙ্গোয়া ফার্মহাউসের কো-অর্ডিনেটর সন্দীপন দত্তর সঙ্গে, এই নম্বরেঃ ৯৪৩৪৮৭২৫২০, ৯৪৭৪৮৩৭৬৭৬

 

 

ভগবতীপুর কন্টেনার ফার্মস্টে:

জাহাজে মাল বহনের জন্য ব্যবহৃত স্টিলের বিরাটাকার সব কন্টেনার দিয়ে তৈরি বাড়িঘর। পূর্ব ভারতে কন্টেনার-আবাস এই প্রথম। বসবাসের উপযোগী অত্যাধুনিক সমস্ত সুযোগসুবিধা রয়েছে সেখানে। ফুল-সবজির বাগান, বড় গাছগাছালি, সুদৃশ্য লন, গ্রীষ্মে জলক্রীড়ার জন্য সপ্ল্যাশ পুল, জলাশয়, কচিকাঁচাদের জন্য খেলাধূলার ব্যবস্থা, বীরভূমের গ্রামীণ পরিবেশে, এই সব কিছু নিয়ে দু-দিনের নিভের্জাল ছুটি কাটানোর ঠিকানা ভগবতীপুর কন্টেনার ফার্মস্টে। বোলপুর থেকে দূরত্ব ১২ কিলোমিটার।

সৌজন্যে ভাগবতীপুর কন্টেনার ফার্মস্টে ওয়েবসাইট

আশেপাশে:

বেড়িয়ে আসতে পারেন কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিখ্যাত উপন্যাস ‘হাসুলি বাঁকের উপকথা’র সেই হাসুলি বাঁক, কোপাই নদী, বল্লভপুর অভয়ারণ্য, খোয়াই ও সোনাঝুরি, শান্তিনিকেতন এবং কঙ্কালীতলা, ফুল্লরা ও নন্দীকেশ্বরী শক্তিপীঠ। এ সবই ভগবতীপুর ফার্মস্টের ২০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে অবস্থিত।

সৌজন্যে ভাগবতীপুর কন্টেনার ফার্মস্টে ওয়েবসাইট

বেড়ানোর পরিধি আরেকটু বাড়াতে চাইলে যেতে পারেন হেতমপুর রাজবাড়ি, বক্রেশ্বর, নলাটেশ্বরী শক্তিপীঠ, তারাপীঠে। বেড়িয়ে আসতে পারেন আমখৈ ফসিল পার্ক, তিলপাড়া ব্যারেজ, গণপুরের জঙ্গল। বেড়ানোর জন্য ফার্মস্টে থেকে গাড়ির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।

চাইলে গ্রামের পথে বেড়িয়ে, পুলে স্নান করে, পুকুরে মাছ ধরে একেবারে ছুটির মেজাজে সময় কাটাতে পারেন।

সৌজন্যে ভাগবতীপুর কন্টেনার ফার্মস্টে ওয়েবসাইট

যাওয়ার পথ:

ভগবতীপুরের নিকটতম রেলস্টেশন আমদপুর। স্টেশন থেকে হেঁটেই ফার্মস্টেতে চলে আসা যায়। বোলপুর থেকে ভগবতীপুর কন্টেনার ফার্মস্টের দূরত্ব ১২ কিলোমিটার। অটো ভাড়া করে চলে আসা যাবে। গাড়িতে এলে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে বর্ধমান পৌঁছে সেখান থেকে শান্তিনিকেতনগামী রাস্তা ধরতে হবে। বোলপুর ছাড়িয়ে প্রান্তিক রেলস্টেশনের দিকে যেতে আমদপুর চৌরাস্তা মোড়ের দিকে যাওয়ার রাস্তা ধরতে হবে। চৌরাস্তা মোড় থেকে ৬ নম্বর রাজ্য সড়ক ধরে একটু এগলেই আমদপুর পুলিশ স্টেশন, কাছেই ফার্মস্টে।

থাকার ব্যবস্থা:

ভগবতীপুর কন্টেনার ফার্মস্টেতে রয়েছে চারটি কন্টেনার-রুম। সবকটিই এসি রুম। প্রতি ঘরে ৩ জন অতিথি থাকতে পারেন। সেক্ষেত্রে দিনপ্রতি থাকা-খাওয়া সহ মাথাপিছু খরচ ১৩৯৫ টাকা। ঘরে ২ জন অতিথি থাকলে থাকা-খাওয়া সহ মাথাপিছু খরচ পড়বে ১৬৫০ টাকা। একটি ঘরে একজনই অতিথির ক্ষেত্রে দিনপ্রতি থাকা-খাওয়ার খরচ ২৯৫০ টাকা। ৩ বছরের নীচের শিশুর জন্য কোনও খরচ নেই। ৪ থেকে ৯ বছরের শিশুর ক্ষেত্রে দিনপ্রতি খরচ ৪৫০ টাকা। ৯ বছরের বেশি বয়সের বাচ্চার ক্ষেত্রে পূর্ণ খরচ লাগবে।

যোগাযোগের নম্বরঃ ৯৬৭৪১৮৫৫৪২।

সৌজন্যে ভাগবতীপুর কন্টেনার ফার্মস্টে ওয়েবসাইট

বাওয়ালি ফার্মহাউস:

বারো বিঘা জমি জুড়ে একাধিক বাগান, সবুজ মাঠ, জলাশয়, নার্সারি, অতিথিদের জন্য গাছবাড়ি, কটেজ, টেন্ট, মাড হাউস, কেভ হাউস, সুইমিং পুল, প্রায় ৫০ জন অতিথির একসঙ্গে খাওয়াদাওয়ার উপযোগী চারদিক খোলা ডাইনিং হল, আড্ডাখানা, খেলার ঘর, কনফারেন্স হল ইত্যাদি নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগণার নোদাখালির খেজুরতলায় বাওয়ালি ফার্মহাউসের বিশাল কর্মকাণ্ড। ফার্মহাউসের কম্পাউন্ডের মধ্যে রয়েছে এন জি ও পরিচালিত একটি স্কুল-ও। এলাকার পিছিয়ে পডা পরিবারের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে সেখানে।

বাওয়ালি ফার্মহাউসে দুটো দিন থাকা মানে গ্রামীণ পরিবেশের মধ্যে বিশ্রাম নেওয়া, ফসফুসে বিশুদ্ধ অক্সিজেন ভরে নেওয়া। সুইমিং পুলে সাঁতার কাটা যায়, ফার্মহাউসের পুকুরে মাছ ধরতে পারেন, খেলাঘরে টেবিল টেনিস বা ক্যারাম খেলতে পারেন, হেঁটে বা সাইকেলে চেপে শস্য বা ফুলের খেতের ধারের রাস্তা ধরে গ্রাম বেড়িয়ে আসুন। ফার্মহাউস থেকে সাইকেলের যোগান পাবেন, চাইলে গাইডও পাবেন। ৩০০ বছরের পুরনো বাওয়ালি রাজবাড়ি, গোপীনাথ জিউয়ের টেরাকোটা মন্দির, বজবজের কোমাগাতা মারু স্মারক দেখে আসতে পারেন। কাছেই সেই ফেরিঘাট, যেখানে চিকাগোর ধর্ম-মহাসম্মেলনে বক্তৃতা করার পরে দেশে ফিরে স্বামী বিবেকানন্দ জাহাজ থেকে বাংলার মাটিতে প্রথম পা রাখেন। বাওয়ালি ফার্মহাউস থেকে বুড়ুল পাখিরালয় ১৫ কিলোমিটার। বর্ষার মরশুমে নদীতীরের গ্রাম বুড়ুলে প্রচুর পাখি আসে ডিম পাড়তে। বেড়িয়ে আসতে পারেন হুগলি নদীর তীরের রায়পুর থেকে। যেতে পারেন ধর্মীয় স্থান বড় কাছারিতে। সদলবলে পিকনিক করার জন্যও যাওয়া যায় বাওয়ালি ফার্মহাউসে।

 

 

যাওয়ার পথ :

ট্রেনে গেলে বজবজ স্টেশন থেকে কে পি মণ্ডল রোড ধরে চরিয়াল হয়ে আধ ঘন্টায় বাওয়ালি ফার্মহাউস পৌঁছে যাওয়া যাবে। প্রাইভেট গাড়িতে গেলে তারাতলা, বজবজ ট্রাঙ্ক রোড হয়ে কে পি মণ্ডল রোড ধরতে হবে। এসপ্ল্যানেড থেকে বাওয়ালি ফার্মহাউস ৩৪ কিলোমিটার।

থাকার ব্যবস্থা : 

বাওয়ালি ফার্মহাউসে থাকার জন্য রয়েছে এসি দ্বিশয্যার ঘর, কটেজ, টেন্ট, ট্রি হাউস। ব্যবস্থা অনুসারে ভাড়া ১,৯০০ থেকে ৪২৫০ টাকা।
যোগাযোগের নম্বরঃ ৭০৪৪৮০০৯৬২, ৯০০৭০৩৫৮৯৫ (সোম থেকে শুক্র বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ফোন করবেন)।

খেয়াতরী: 

গেরুয়ারঙা মাটি। সবুজ খেত। বাতাসে বাউলিয়া সুর। ওই তো বয়ে চলেছে অজয়। শীতে ঘাসে ঘাসে শিশিরবিন্দু। খেতভরা সবজি, বাগানভরা ফুল। আদিবাসী মেলা। ফাগুন আসে রঙের ডালি নিয়ে। গ্রীষ্মে দখিনা বাতাসে প্রাণ জুড়োয়। বর্ষায় অজয়ের ওপার থেকে ধেয়ে আসে মেঘপুঞ্জ। দিগন্ত জুড়ে নেমে আসে বর্ষামঙ্গল। শরতে দিঘির পাড়ে কাশের ঝালর দোলে। তারপর দূরে ঢাকের বাদ্যি। নীল আকাশে উড়ন্ত মেঘপুঞ্জ।

এমনই পরিবেশে খেয়াতরী, এক অন্যরকমের ভ্রমণ ঠিকানা।

বীরভূমের দারান্দায় অর্গানিক ফার্মহাউস খেয়াতরী। বিরাট এলাকা জুড়ে চাষবাস। জৈব পদ্ধতিতে চাষ হয়। বাগান আলো হয়ে থাকে ফুলে ফুলে। তার মধ্যে খেয়াতরীর ছড়ানো ছেটানো বাড়িঘর। অতিথিদের গল্পগুজবের জন্য রয়েছে আলাদা আড্ডাঘর। খাওয়ার টেবিলে নানা পদে পাবেন বাঙালি ঐতিহ্যের আন্তরিক ছোঁয়া। চাইলে সামান্য দক্ষিনার বিনিময়ে কোনও বাউল ভাই এসে গান শুনিয়ে যাবে। লালমাটির পথ ধরে ঢুকে পড়তে পারেন কোনও গ্রামে। চলে যেতে পারেন অজয়ের তীরে।

খেয়াতরী থেকে শান্তিনিকেতন ৮ কিলোমিটার, খোয়াই ৮ কিলোমিটার, শ্রীনিকেতন ৬ কিলোমিটার, বোলপুর ১০কিলোমিটার, কঙ্কালীতলা দেড় ঘন্টার পথ। শান্ত সুন্দর দারান্দার খেয়াতরীতে থেকে বেড়িয়ে নেওয়া যায় জায়গাগুলো। প্রয়োজনে ভাড়ার বিনিময়ে গাড়ি পাবেন ফার্মহাউস থেকে।

যাওয়ার পথ

ট্রেনে বোলপুর স্টেশনে নেমে সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে দ্রুত খেয়াতরী পৌঁছে যেতে পারেন। গাড়ি নিয়ে গেলে দুর্গাপুর হাইওয়ে ধরে শক্তিগড় ছাড়িয়ে রেনেসাঁ মোড় থেকে ডানহাতি রাস্তা ধরে খানিকটা এগিয়ে ইলমবাজারগামী বাঁ-হাতি রাস্তা ধরতে হবে। ইলমবাজার থেকে বাঁ-দিকের রাস্তা ধরে একটু এগলেই দারান্দা, খেয়াতরী।

থাকার ব্যবস্থা

থাকার ব্যবস্থা খেয়াতরী ফার্মহাউসে। প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে থাকার ব্যবস্থ। মিলবে আধুনিক সমস্ত সুযোগ-সুবিধা। ঘরের ভাড়া ২৫০০ টাকা। বড় আকারের ঘর। ঘরপ্রতি ৩ জনের প্রাতরাশের খরচ ঘরভাড়ার সঙ্গে ধরা থাকে। খেয়াতরী কুর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনে একটি ঘরে ৬ জন পর্যন্ত অতিথি থাকতে পারেন। সেক্ষেত্রে তিনজনের আতিরিক্ত জনপ্রতি অতিরিক্ত ৪০০ টাকা লাগবে। এই ৪০০ টাকার মধ্যেও প্রাতরাশের খরচ ধরা থাকবে। মধ্যাহ্নভোজ ও নৈশভোজের খরচ সকলের ক্ষেত্রেই আলাদা।

যোগাযোগের নম্বরঃ ৯০৫১৭১৯৯০৩, ৯৭৪৮০০১২৬৮।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *