Follow us
Search
Close this search box.

আলিপুরদুয়ার শহর থেকে ডুয়ার্সের নানা দিকে

আলিপুরদুয়ার শহর থেকে ডুয়ার্সের নানা দিকে

অজয় রায়

২০১৪-র ২৫ জুন পশ্চিমবঙ্গের ২০ তম জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে আলিপুরদুয়ার। জলপাইগুড়ি জেলা থেকে একাংশ কেটে নিয়ে আলিপুরদুয়ার জেলাটি গঠিত হয়। পাহাড়, জঙ্গল, নদীর সমাহারে অবাক করা নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আলিপুরদুয়ারকে ডুয়ার্সের অন্দরমহলে প্রবেশের দ্বার বলা চলে।

আলিপুরদুয়ার পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র জেলা, যার পরিসীমার মধ্যে দুটো জাতীয় উদ্যান রয়েছে। ১) ৭৬১ বর্গ কিমি আয়তনের বক্সা টাইগার রিজার্ভ। ২) একশৃঙ্গ গন্ডারের জন্য বিখ্যাত ১৪১ বর্গ কিমি আয়তনের জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান। জলদাপাড়ার কাছেই রয়েছে চিলাপাতার অরণ্য। চায়ের বাগান আলিপুরদুয়ারের নৈসর্গিক দৃশ্যপটে একটি বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে। ৬৪টি চায়ের বাগান রয়েছে এই জেলায়। সব মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন মানচিত্রে আলিপুরদুয়ার একটি বিশিষ্ট জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। ভ্রমণরসিকরা বার বার ছুটে আসেন এখানে।

আলিপুরদুরার শহরকে যদি কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ধরা যায়, তবে সেখান থেকে বেড়িয়ে আসা যায় ডুয়ার্সের নানা অঞ্চল। আলিপুরদুয়ার থেকে বেড়ানোর জায়গাগুলির একটি তালিকা রইলো নীচে। আমার যাতায়াতের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আলিপুরদুয়ার থেকে সেই ভ্রমণ ঠিকানাগুলির দূরত্ব জানালাম। একটু এদিক-ওদিক হতে পারে। গুগুল ম্যাপ দেখে নিতে পারেন।

আলিপুরদুয়ার শহর থেকে বেড়ানো যায়

জলদাপাড়া ৪২ কি.মি., দক্ষিণ খয়েরবাড়ি ৫৫ কি.মি., জয়গাঁ/ফুলশেলিং(ভুটান) ৫৮ কি.মি., টোটো পাড়া ৬৩ কি.মি., চিলাপাতা ফরেস্ট ২৮ কি.মি.,মালঙ্গি ২৯ কি.মি., কুঞ্জনগর ইকো পার্ক ৪১ কি.মি.,রাজাভাতখাওয়া ১৪ কি.মি., সিকিয়াঝোড়া ১৫ কি.মি., রায়মাটাং ৩৯ কি.মি., সেন্টাল ডুয়ার্স/রাঙামাটি ৪৬ কি.মি., বক্সা ফোর্ট ৩৪কি.মি., লেপচাখা ৩৬ কি.মি., জয়ন্তী ৩২ কি.মি.,হাতিপোতা ৩৮ কি.মি., ভুটান ঘাট ৪৪ কি.মি., রায়ডাক বন বাংলো ৩২ কি.মি., কুমারগ্রাম দুয়ার ৫০কি.মি., নারাথলি হ্রদ ৩২ কি.মি.।

বক্সা বাঘ বনের জয়ন্তী ও রাজাভাতখাওয়ায় জিপ্সি সাফারি, চিলাপাতা ফরেস্ট ও জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে জিপ্সি ও হাতি সাফারি হয়। নিউ আলিপুরদুয়ার এবং আলিপুরদুয়ার জংশন ও নিউ হাসিমারা এখানকার প্রধান রেলস্টেশন। পশ্চিমবঙ্গের এই জেলায় অন্তত ১৫টি সম্প্রদায়ের জনজাতি মানুষের বসবাস রয়েছে। ভারতে একমাত্র এই জেলাতেই টোটো জনজাতির মানুষের বসবাস রয়েছে।

প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগের সঙ্গে সঙ্গে আলিপুরদুয়ারে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর কৃষ্টি, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক, ধর্ম, জীবনযাত্রা সম্পর্কে জানার সুযোগ রয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৬ জুন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সকল প্রকারের জঙ্গল সাফারি বন্ধ থাকে। যাঁরা হাতে একটু সময় নিয়ে ডুয়ার্স বেড়ানোর ইচ্ছা পোষণ করেন, তাঁরা উপরোক্ত জায়গাগুলির সমাহারে আগেভাগেই একটি পরিকল্পনা ছকে নিতে পারেন।

জঙ্গল সাফারি বন্ধ থাকলেও বর্ষার ডুয়ার্সে বেড়ানোর ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। বর্ষার ডুয়ার্স গাঢ় সবুজ। মূর্তি, জলঢাকা, জয়ন্তী নদী এ সময়ে প্রাণোচ্ছল। চায়ের বাগানে ঝেঁপে আসা বৃষ্টির দৃশ্য তো এ সময়েই দেখার।

লেখক পেশায় একজন পর্যটন ব্যবসায়ী। আজন্ম আলিপুরদুয়ার জেলার জয়ন্তীর বাসিন্দা। ডুয়ার্সকে চেনেন হাতের তালুর মতো। যোগাযোগের নম্বরঃ 8803470737

ফটোঃ লেখক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *