বর্ষার প্রকৃতির জাদুকরী রূপ দেখতে অনেকেই মেঘালয়ের শিলং, চেরাপুঞ্জি বেড়াতে যাবেন। গুয়াহাটি থেকে শিলং যাওয়ার পথে বা শিলং থেকে গুয়াহাটি ফেরার সময়ে একটা রাত উমিয়াম লেকের তীরে কাটানোর ব্যবস্থা করা গেলে সমগ্র ভ্রমণে যে মনে রাখার মতো আলাদা মাত্রা যুক্ত হবে তাতে সন্দেহ নেই।
পাহাড়ের রাজ্যে বিশাল কৃত্রিম লেকটির বিস্তার চোখে পড়ে সড়কপথে গুয়াহাটি-শিলং যাতায়াতের পথে। গুয়াহাটি-শিলং জাতীয় সড়ক-৪০ বরাবর লেকের প্রসার। বর্ষায় বড়াপানিতে, উমিয়ামের আঞ্চলিক নাম, আলোছায়ার খেলা চলে। নানা ছন্দের বৃষ্টি হয়। তার শব্দ খেলে বেড়ায় বাতাসে। মেঘ-চেরা রোদ্দুর ঝলকে ওঠে লেকের জলে। এমন অনেক ছবি তৈরি হয় উমিয়ামে।
সড়কপথে গুয়াহাটি থেকে শিলং ১০০ কিলোমিটার। শিলং থেকে উমিয়াম লেক কমবেশি ২১ কিলোমিটার। গুয়াহাটি থেকে উমিয়াম লেক কমবেশি ৮০ কিলোমিটার। বাস, শেয়ার গাড়ি, ট্যাক্সি হরদম চলছে শিলং-গুয়াহাটি পথে।
পূর্ব খাসি হিলসের প্রায় শুরুতে রি ভোই জেলায় হ্রদের উৎপত্তি উমিয়াম নদীতে বাঁধ দেওয়ার ফলে। পাহাড় ঘেরা ছবির মতো লেকের কাছে এই বর্ষাতে দু’-একটা দিন কাটিয়ে যান রসিকজনেরা। নবীণদের জন্য লেকে বোটিং, কায়াকিং, ওয়াটার স্কি-র মতো অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের ব্যবস্থা আছে। লক্ষ্য করলে। আকাশ আর জলের কত যে নিরুচ্চার সুর এখানে।
শিলং থেকে দিনে দিনে বড়াপানি বেড়িয়ে আসা যেতে পারে। শিলং থেকে গাড়ি পাওয়া যায়। তবে একটা রাত অন্তত ওখানে থাকা গেলে লেকের পরিবেশটাকে উপভোগ করা যায়। বেড়ানোটা আরও আনন্দের হয়।
কাছেই, লেকের পারে নেহরু পার্ক। সুন্দর ভিউ পয়েন্ট। পাহাড়-জলের মাখামাখিটা অপরূপ লাগে এখান থেকে। পাখি আছে অনেক জায়গাটায়। একটা মিনি জু আছে। ভালো লাগবে বেড়িয়ে আসতে। ডন বস্কো মিউজিয়ামটি দেখে আসা যায়। উত্তর পূর্ব ভারত এবং নেপাল, ভুটান ও মায়ানমারের আদিবাসী সংস্কৃতি সম্পর্কে মূল্যবান সব তথ্য পাওয়া যাবে এখানে। এই অঞ্চলগুলিতে নানা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর এক অঞ্চল থেকে আরেক অঞ্চলে গতায়াত-সংক্রান্ত মূল্যবান সব তথ্য পেতে পারেন উৎসাহী জনেরা।
তবে উমিয়ামের তীরে থাকলে, বিশেষ করে রিমঝিম বর্ষার মরসুমে, ওই লেক ও তার সংলগ্ন পরিবেশটিই মূলত উপভোগ্য হয়ে ওঠে।
থাকার জন্য মেঘালয় পর্যটন উন্নয়ন নিগমের (MTDC) অর্কিড লেক রিসর্টের অবস্থানটি চমৎকার। পাহাড় ও লেকের অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছে জায়গাটায়। রির্সটের বাগানটিও খুব সুন্দর। লন বা ঘর-সংলগ্ন বারান্দায় বসে লেক আর পাহাড় পানে চেয়ে চয়ে কোথা দিয়ে সময় কেটে যায়।
ডাইনিং হলে বসে লেক দেখা যায়। দ্বিশয্যা ঘরের ভাড়া ৩,২৫০-৪৫০০ টাকা। অনলাইন বুকিং করা যাবে এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমেঃ https://mtdcmeghalaya.in/rooms/orchid-lake-resort/ ফোনঃ ( ০৩৬৪) ২২২ ২৭৩১।
ফটো সৌজন্যঃ মেঘালয় পর্যটন (মেঘালয় সরকার)।