যেমন প্রাকৃতিক বৈচিত্র, তেমন সৌন্দর্য। ঈশ্বরের আপন দেশ। কেরালা। এক লপ্তে সব জায়গায় বেড়ানো হয়তো হয়ে উঠবে না। তবে ট্রেনে যাতায়াত নিয়ে ১৪-১৫ দিনে কেরালার অনেকটাই বেড়ানো যায়। সেক্ষেত্রে রাজ্যটির কোথায় কোথায় কী ভাবে বেড়ানো যেতে পারে তা নিয়ে নিজ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সুচিন্তিত একটি ভ্রমণ সূচি তৈরি করেছেন তুষার পাত্র।
সফর সূচি
প্রথম দিনঃ হাওড়া থেকে বিকেল ৪-১০-এর কন্যাকুমারী সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসে (১২৬৬৫) কন্যাকুমারীর উদ্দেশে যাত্রা শুরু।
দ্বিতীয় দিনঃ ট্রেনে।
তৃতীয় দিনঃ বেলা ১০-৫৫ নাগাদ কন্যাকুমারীতে পৌঁছে হোটেলে বিশ্রাম। বিকেলে সৈকতে বসে সমুদ্রে সূর্যাস্ত দেখুন। রাত্রিবাস কন্যাকুমারীতে।
চতুর্থ দিনঃ সকালে বিবেকানন্দ রক ও কন্যাকুমারী মন্দির দর্শন। বিকেলে কন্যাকুমারী থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরের পদ্মনাভপূরম প্যালেস ও ভারতমাতার মন্দির দেখে নেওয়া যাবে। এদিনও কন্যাকুমারীতে রাত্রিবাস।
পঞ্চম দিনঃ সকাল সকাল কেরালার রাজধানী শহর তিরুবনন্তপুরমের উদ্দেশে যাত্রা। দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার। হোটেলে ঢোকার আগেই দেখে নিতে পারেন পদ্মনাভস্বামী মন্দির। দর্শনের সিদ্ধান্ত নিলে পুরুষরা ধুতি ও মহিলারা শাড়ি সঙ্গে রাখবেন। বিকেলে যাবেন কোভালাম বিচে। তিরুবনন্তপুরমে রাত্রিবাস।
ষষ্ঠ দিনঃ সকালে রওনা দেওয়া আলেপ্পির পথে। তিরুবনন্তপুরম থেকে ১৫৪ কিলোমিটার। বিকেলে দেখুন আলেপ্পি বিচ। আলেপ্পিতে রাত্রিবাস।
সপ্তম দিনঃ আলেপ্পি থেকে জলপথে (ব্যাক ওয়াটার) কুমারকম। জলপথে ৩৩ কিলোমিটার। জলভ্রমণ শেষে গাড়িতে থেক্কাডি। এখানে অনেক হোটেল। থাকার সুবিধে। থেক্কাডি থেকে পেরিয়ার ৪ কিলোমিটার। থেক্কাডিতে মার্শাল আর্টের শো দেখতে পারেন। রাত্রিবাস থেক্কাডিতে।
অষ্টম দিনঃ সকালে থেক্কাডি থেকে পেরিয়ারে চলে আসুন। থেক্কাডি থেকে কেরালা পর্যটনের গাড়ি পাওয়া যায়। প্রথমে পেরিয়ার লেকে ঘন্টা দুয়েকের নৌভ্রমণ। তারপর পেরিয়ারের জাতীয় বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্যের খানিক বেড়িয়ে দেখা। পেরিয়ার লেকে ভ্রমণ, জঙ্গল সাফারির জন্য আগেভাগে অনলাইনে টিকিট বুক করতে পারেন এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমেঃ https://www.periyartigerreserve.org/ পেরিয়ারের অরণ্যাবাসও বুক করা যাবে এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। থেক্কাডি মশলার জন্য বিখ্যাত। নানাবিধ মশলা কিনতে পাওয়া যায় এখানে। থেক্কাডিতে রাত্রিবাস।
নবম দিনঃ আজ মুন্নার যাত্রা। থেক্কাডি থেকে দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার। মুন্নার পৌঁছে দুপুরে বিশ্রাম। বিকেল, সন্ধ্যায় মুন্নারের বাজার বেড়িয়ে দেখতে ভালো লাগবে। এখানকার হোমমেড চকোলেট বিখ্যাত। মুন্নারে রাত্রিবাস।
একাদশতম দিনঃ প্রাতরাশ সেরে সকাল সকাল বেডিয়ে পড়া যাক কোচির পথে। প্রায় ৩ ঘন্টা সময় লাগবে। কোচিতে পৌঁছে লাঞ্চ। খাওয়াদাওয়ার পরে বেরিয়ে পড়ুন কোচি শহরটা দেখতে। দেখুন সেন্ট ফ্রান্সিস চার্চ, সান্তাক্রুজ ব্যাসিলিকা, ভাস্কো-দা-গামা স্কোয়ার, ডাচ মিউজিয়াম, জিউ টাউন, ইহুদি মন্দির, ভেম্বানাদ লেক, কেরালা ফোকলোর মিউজিয়াম, ফোর্ট কোচি, লুলু শপিং মল।
দ্বাদশ দিনঃ আজ দুপুর পর্যন্ত কোচি বেড়ানোর জন্য বরাদ্দ থাকবে। সব দেখা না-ও হতে পারে, তবে হবেও অনেকটা। দিন বাড়ানো গেলে রয়েসয়ে বেড়ানো যেতে পারে। বিকেলে সোজা এর্নাকুলাম স্টেশন। বিকেল ৫-২০ তে ছাড়ছে চেন্নাই সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস (২২৬৪০)। চেন্নাই পৌঁছানোর সময় পরের দিন সকাল ৫-৫০।
ত্রয়োদশ দিনঃ চেন্নাই থেকে সকাল ৮-৪৫ এ ছাড়বে হাওড়াগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস।
চতুর্দশ দিনঃ এ দিন দুপুর পৌনে ১২টা নাগাদ ট্রেন পৌঁছাবে হাওড়া স্টেশনে।
ফটোঃ উপর থেকে যথাক্রমে ব্লু বার্ড ট্র্যাভেলস, কেরালা টুরিজম, পি সুরভি, উইকিমিডিয়া কমনস, এটারনো, ম্যাপকার্টা, ট্র্যাভেল ডিউডস।