দক্ষিণ বাঁকুড়ার শেষ প্রান্তে ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা সবুজ জনপদ ঝিলিমিলি। মস্ত সব শাল, শিমূল, মহুয়া বৃক্ষে ছাওয়া ঝিলিমিলির প্রকৃতি আপনাকে শান্তি দেয়। গ্রীষ্মেও ঝিলিমিলির বাতাস আরামদায়ক। বর্ষায় ঝিলিমিলির টিলাপাহাড়, জঙ্গল জেগে ওঠে মেঘমল্লার রাগে। বাঁকুড়া শহর থেকে ঝিলিমিলি ৭০ কিলোমিটার, মুকুটমণিপুর থেকে ৪৫ কিলোমিটার।
ঝিলিমিলির হাইস্কুল রোড ধরে খানিকটা এগিয়ে রিমিল লজকে বাঁদিকে রেখে আরও পাঁচ কিলোমিটার গেলে রাউতাড়া গ্রামের শেষ প্রান্তে তালবেড়িয়া ড্যাম। অনুচ্চ সবুজ পাহাড় আর জঙ্গলে ঘেরা ছবির মতো বিশাল জলাধার তালবেড়িয়া। ড্যামের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত গেছে পিচঢালা রাস্তা। মাঝামাঝি লকগেট।
তালবেড়িয়া ড্যামের উপর দাঁড়ালে যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। মাঝখানে নীল জলরাশি। তাতে আকাশের কত ছবি। জঙ্গল, টিলা আর সেই বিশাল জলাধার ব্যেপে বৃষ্টির ধারাপাত এক অনির্বচনীয় দৃশ্য রচনা করে। মন চাইলে নৌকায় করে ভেসে পড়া যায় জলে। জলাধারের পারে বসলে কোথা দিয়ে সময় কেটে যাবে। ইতিউতি পাখি ডাকে, প্রজাপতি ওড়ে। সকাল সকাল যেতে পারলে তালবেড়িয়ার জল-জঙ্গল জুড়ে সূর্যোদয়ের দৃশ্য সহজে ভোলবার নয়। বন-পাহাড়িয়া তালবেড়িয়া নিরালায় রয়েছে আমাদের অপেক্ষায়।
বাঁকুড়া শহর থেকে ঝিলিমিলি চলে আসা যায় সহজেই। ঝাড়গ্রাম থেকে বিনপুর, শিলদা, বেলপাহাড়ি হয়ে পৌঁছে যাওয়া যায় ঝিলিমিলি। দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার। কলকাতা থেকে ঝিলিমিলি আসার নাইট সার্ভিস বাস আছে। মুকুটমণিপুর থেকেও দিনের দিন তালবেড়িয়া বেড়িয়ে আসা যায়। চাইলে ঝিলিমিলিতে থেকে যাওয়া যায়।
থাকার জন্য ঝিলিমিলিতে আছে রিমিল লজ। ডিলাক্স রুম, কটেজ, ট্রি হাউস, টেন্ট, নানা ব্যবস্থা আছে। রিমিল লজের ফোন নম্বরঃ ৮৫৩৮৮ ৩৪০৩১। রিমিল লজের ‘সুরুচি’ নামের রেস্তোরাঁটিও চমৎকার।
এই রিমিল লজে থেকেই বেড়িয়ে নেওয়া যায় সুতানের জঙ্গল, মুকুটমণিপুর। হাতে সময় থাকলে এ যাত্রায় যোগ করে নিতে পারেন ঝাড়গ্রাম ও বেলপাহাড়িকেও।
হেডার ছবি সৌজন্যঃ বাঁকুড়া টুরিজম।