Follow us
Search
Close this search box.

লে-র কাছেই সিন্ধু নদীর তীরে উৎসব

লে-র কাছেই সিন্ধু নদীর তীরে উৎসব

লাদাখের রাজধানী শহর লে-র কাছেই সিন্ধু ঘাট বা সিন্ধু দর্শন ঘাট। লে শহর থেকে দূরত্ব ৯ কিলোমিটার। সিন্ধু নদ বা নদীকে কাছ থেকে দেখার একটি চমৎকার জায়গা এই সিন্ধু ঘাট। লে থেকে একটা ট্যাক্সি ভাড়া করে অনায়াসেই বেড়িয়ে আসা যায় সিন্ধু ঘাট থেকে। মিনিট পনের সময় লাগে গাড়িতে। প্রতি বছর গুরু পূর্ণিমার সময়ে সিন্ধু ঘাট উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। ৩ দিন চলে সেই উৎসব। লাদাখ ভ্রমণে এ সময়ে যাঁরা লে-তে অবস্থান করবেন, তাঁরা একবার সিন্ধু ঘাট থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেন। লাদাখের দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এ সময়ে সিন্ধু ঘাটে আসেন। মেলা বসে যায় জায়গাটায়। আয়োজিত হয় নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এ বছর সিন্ধু দর্শন যাত্রা তথা সিন্ধু উৎসবের প্রস্তুতি চলছে। ২০২৪-এ মূল উৎসব চলেছিল ২৫ থেকে ২৭ জুন। সাধারণত জুন মাসে এই উৎসব আয়োজিত হয়। ২০২৫-এ গুরুপূর্ণিমা ১০ জুলাই। আগামী উৎসবের দিনক্ষণ নিয়ে উদ্যোক্তাদের যে ভাবতে হচ্ছে তা বোঝা যায়। পূর্ণিমার সঙ্গে জড়িত হয়ে আছে এই উৎসব।

সিন্ধু ঘাট যাত্রা আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছে ‘সিন্ধু দর্শন যাত্রা সমিতি’। সহায়তায় থাকে সরকারি প্রশাসন। সমিতির পক্ষ থেকে উৎসবের তারিখ এখনো ঘোষণা করা হয়নি। সিন্ধু দর্শন যাত্রা সমিতির সঙ্গে যোগাযোগের নম্বরঃ 9821892711-16.

সাম্প্রতিক ভারত-পাক দ্বৈরতের প্রত্যক্ষ কোনও আঁচ লাদাখে পড়েনি। তবে সিন্ধু নদীটির সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে কূটনীতির জটিলতা। চিন আর কত দূরে থাকতে পারে? লাদাখের সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে চিনের। এ হেন পরিবেশ-পরিস্থিতিতে একটি বড় সমাবেশ আয়োজনের জন্য সতর্কতার বিষয়টি নিয়ে আঁটোসাঁটো পরিকল্পনা থাকাটাই তো স্বাভাবিক। প্রসঙ্গত, জাতীয় সংহতি, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে ধর্মীয় অনুষঙ্গ যুক্ত হয়ে রয়েছে ‘সিন্ধু দর্শন যাত্রা’র সঙ্গে।

আড়াই দশক আগে, ২০০০ সালের ৭ জুন সিন্ধু ঘাটের বর্তমান পরিকাঠামোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী। ২০০১ সালের ১ জুন তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লালকৃষ্ণ আডবাণী সেই স্থাপনার উদ্বোধন করেছিলেন।

ধাপে ধাপে পাথরে বাঁধানো চত্বর নেমে গেছে নদী পর্যন্ত। রয়েছে অ্যাম্পিথিয়েটারের ব্যবস্থা, বিশ্রামাগার, গাড়ি পার্কিংয়ের প্রশস্ত জায়গা। আর যুগ যুগ ধরে বহে চলেছে বয়ে চলেছে তিব্বত তথা চিনের কৈলাশ পর্বতের উত্তর-পূর্বাংশ থেকে জন্ম নেওয়া নদীটি। ৩,১৮০ মিলোমিটার দীর্ঘ সিন্ধু নদী চিন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে এবং নদীর মূল ধারাটি পাকিস্তানের বন্দর শহর করাচির অদূরে আরব সাগরে মিলিত হয়েছে।

এই সিন্ধু নদী মানব সমাজের অনেক উত্থান-পতন দেখেছে। যিশু খ্রিস্টের জন্মের অন্তত আড়াই হাজার বছর আগে বর্তমান পাকিস্তানের সিন্ধু-তীরবর্তী একটা বড় অংশ, পশ্চিম ভারত ও আফগানিস্তানের একাংশ নিয়ে গড়ে উঠেছিল সিন্ধু সভ্যতা তথা হরপ্পা সভ্যতা। সিন্ধু নদী ছিল সেই
প্রাচীন সভ্যতার জীবনরেখা।

২০২৫ সালে সিন্ধু ফের সংবাদের শিরোনামে।

হে প্রাচীন নদী, প্রকৃতির সন্তান, তোমার সীমা-পরিসীমা নিয়ে মনুষ্য ‘সভ্যতা’র কত আকচা-আকচি, তারপরেও প্রার্থনা, ভালো থেকো যেন-

ফটো সৌজন্য
জু-লে-অ্যাডভেঞ্চার
ভার্গিস খান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *