গুলমার্গ থেকে ১০ কিলোমিটারের এক অসাধারণ যাত্রা শেষে পৌঁছে যাওয়া যায় কাশ্মীরের আরেক মন মাতানো উপত্যকা নাগিন ভ্যালিতে। ৯০০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত নাগিন ভ্যালি থেকে ভারত-পাক সীমান্তের দূরত্ব ৫ কিলোমিটার। ২০১২ সাল থেকে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে অপরূপ এই উপত্যকাটি। তুষারাবৃত সব পর্বতশৃঙ্গ, সবুজ তৃণভূমি ও অরণ্য, লেক ইত্যাদির সমাহারে নাগিন ভ্যালি পর্যটকদের আবিষ্কারের অপেক্ষায়।
জম্মু-কাশ্মীরের উত্তরাংশে কুপওয়ারা জেলায় নাগিন ভ্যালির অবস্থান। মাঝে শামশাবাড়ি পর্বতশ্রেণি, ওপারে পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর। উপত্যকার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ছোট ছোট নদী। ঢেউ খেলানো সব তৃণভূমি চোখ জুড়িয়ে দেয়। গ্রীষ্মে সেই তৃণভূমিতে ফুটে থাকে বিভিন্ন জাতের বুনো ফুল।
শরৎ (অক্টোবর-নভেম্বর) কাশ্মীরে পাতা ঝরার মরসুম। এ সময়ে নাগিন উপত্যকা সোনালি রূপ ধারণ করে। শরতের নাগিন ভ্যালিতে রংবেরংয়ের ফুল ফোটে। ডেইজি, পপি, প্রাইমরোজ ফুলে সাজে নিভৃতে থাকা নাগিন উপত্যকা। শীতে বরফে ছাওয়া উপত্যকার আরেক রূপ। হাড় কাঁপানো ঠান্ডা তখন। স্কিয়িংয়ে আসর বসে। জমে থাকা বরফের কারণে শীতের মরসুমে অনেক সময় রাস্তা বন্ধ থাকে। গ্রীষ্মে গুজ্জর ও বকরওয়াল সম্প্রদায়ের মানুষজন তাঁদের ভেড়ার পাল নিয়ে উপত্যকায় আস্তানা গাড়ে। যুগ যুগ ধরে তারা পশুচারণের জন্য নাগিন উপত্যকায় আসছে।
নাগিন উপত্যকার অরণ্য হিমালয়ের বাদামী ভাল্লুক, লেপার্ড, কস্তুরী হরিণ, হিমালয়ান থরের আবাস। উচ্চতর এলাকায় তুষার চিতার আনাগোনা রয়েছে। হিমালয়ান মোনাল চোখে পড়তে পারে। শীতে পরিযায়ী পাখি আসে এখানে।
অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসে আগ্রহীরা উপত্যকায় ট্রেক করতে পারেন। নাগিন ভ্যালি থেকে ট্রেক করে লোলাব ও বাঙ্গাস উপত্যকায় যাওয়া যায়।
গুলমার্গ ভ্রমণের সূচির সঙ্গে নাগিন উপত্যকাকে যুক্ত করে নেওয়া যায়। গুলমার্গ-বোটাপাথরি রোড ধরে পৌনে এক ঘন্টার যাত্রা। শ্রীনগর থেকে নিয়ে আসা গাড়ি নাগিন ভ্যালি যাবে না। গুলমার্গের ট্যাক্সি স্ট্যান্ড থেকে আলাদা গাড়ি ভাড়া করতে হবে। ভ্রমণসূচিতে নাগিন উপত্যকার সঙ্গে খিলানমার্গকেও যুক্ত করে নেওয়া যায়। গুলমার্গ থেকে খিলানমার্গ সাড়ে ৪ কিলোমিটার। নাগিন ভ্যালির নিকটবর্তী শহর কুপওয়ারা। শ্রীনগর থেকে বাসে বা ট্যাক্সিতে কুপওয়ারা পৌঁছে সেখান থেকে আঞ্চলিক গাড়ি ভাড়া করে নাগিন ভ্যালি পৌঁছানো যায়।
ফটোঃ লেখক
লেখকের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর (শ্রীনগর, জম্মু-কাশ্মীর)-62903 63041