তোর্সা ডট ইনঃ ২৪ অক্টোবর মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আছড়ে পড়েছিল ওড়িশার ভিতরকণিকা জাতীয় উদ্যান ও ধামরা অঞ্চলে। ঝড় সরাসরি হানা দিয়েছিল হাবালিখটির সৈকতে। তারপরে লড়ে গেল ম্যানগ্রোভের অরণ্য। প্রথমেই জব্বর লড়াইটা দিয়েছিল হাবালিখটির জঙ্গল। পুবে বঙ্গোপসাগর, পারে তিন দিকে ম্যানগ্রোভের ঘন জঙ্গল। হেঁতালের দঙ্গল ঘূর্ণিঝড়ের বিপরীতে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল পরের দিন ভোর পর্যন্ত। ভিতরকণিকার অরণ্য ঘেঁষে ওড়িশার ভদ্রক জেলার ধামরা সমুদ্র বন্দর। ঝড়ের অভিঘাত সেখানেও ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠতে পারেনি ভিতরকণিকার ঠাসবুনোট বাদাবনের কারণে।
একদিকে সমুদ্র। বিপরীতে অরণ্য। মাঝে সোনালি সৈকত। হাবালিখটি সৈকত। ওড়িশার অন্যতম সেরা সৈকত। শীতে অলিভ রিডলে কচ্ছপেরা ডিম পাড়তে আসে এখানে। একটি অলিভ রিডলে গবেষণা কেন্দ্রও আছে এখানে। শীতের রোদ্দুর এখানে সত্যিই স্বর্ণাভ। চমৎকার সূর্যোদয় দেখা যায় হাবালিখটি সৈকত থেকে। জঙ্গুলে পরিবেশে সৈকত ভ্রমণের জন্য শীতে বহু ভ্রমণার্থী হাবলিখটি বেড়াতে আসেন। ভিতরকণিকা জাতীয় উদ্যান বেড়ানোর সূচিতে হাবালিখটি সৈকত থাকেই।
হাবালিখটিতে সমুদ্রের তীর ধরে, জঙ্গল-পথে ট্রেক করা যায়। একদিকে সমুদ্র, অন্যদিকে ম্যানগ্রোভের অরণ্য দেখতে দেখতে চলা। প্রচুর পাখি আছে এ এলাকায়। কুমির চোখে পড়তেই পারে। গহিরমাতার সৈকত থেকে বেড়িয়ে আসা যায়। শীতে প্রচুর অলিভ রিডলে কচ্ছপ গহিরমাতার সৈকত বাসা বাঁধে। নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রচুর সংখ্যায় দেখা যায় এদের। তখন দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটক আসেন এখানে।
কেন্দ্রাপাড়া জেলার হাবালিখটিতে থাকার জন্য রয়েছে হাবালিখটি নেচার ক্যাম্প। সৈকতের কাছেই ক্যাম্পের অবস্থান। হাবালিখটি নেচার ক্যাম্পের কাছেই সেদিন আছড়ে পড়েছিল ‘দানা’। ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ঝড়ে নেচার ক্যাম্পের বিশেষ কোনও ক্ষতি হয়নি।
কেন্দ্রাপাড়ার সদর শহর থেকে ৬৩ কিলোমিটার দূরে গুপ্তি এলাকা। ভিতরকণিকার অন্যতম প্রবেশদ্বার। নিকটবর্তী রেল স্টেশন কটক। কটক থেকে গুপ্তি ১১৯ কিলোমিটার। ভুবনেশ্বর থেকে গুপ্তি সড়কপথে ১৬০ কিলোমিটার। গুপ্তিঘাট থেকে নৌকায় ঘন্টাতিনেকের জলযাত্রা। চাঁদবালি থেকেও জলযাত্রার সূচনা হতে পারে, সেক্ষেত্রে হাবলিখটি প্রায় পাঁচ ঘন্টা সময় লাগবে। নৌকা থেকে যেখানে নাববেন, সেখান থেকে জঙ্গল পথে আড়াই কিলোমিটারের পদযাত্রা শেষে হাবলিখটি নেচার ক্যাম্পে পৌঁছাবেন। গুপ্তিঘাট বা চাঁদবালি থেকে সামগ্রিক এই যাত্রাটিও অবশ্যই ভ্রমণের অন্তুর্ভক্ত। জলপথে কুমিরের সাক্ষাৎ পাওয়া যেতে পারে। পাখি দেখবেন নানা প্রকারের। দুই শতাধিক প্রজাতির পাখি দেখা যায় ভিতরকণিকার জল-জঙ্গলে।
নেচার ক্যাম্প বুক করা যাবে ওড়িশা বন উন্নয়ন নিগমের এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমেঃ https://www.ecotourodisha.com/ ‘ডেস্টিনেশন’এ ‘ভিতরকণিকা নেচার ক্যাম্পস’এ ক্লিক করবেন। ভিতরকণিকায় অরণ্যের পরিসীমার মধ্যে থাকার জন্য গুপ্তি ও ডংমলে থাকার জন্য নেচার ক্যাম্প রয়েছে।
ওড়িশা ইকো-টুরিজম সেলের ফোন নম্বরঃ দেবাশিস বিসওয়ালঃ ৯৮৬১৮ ০৬৭৪১ (সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টো)/ অবনিকান্ত মিশ্রঃ ৮২৪৯৬ ৪০৩৫৯ (বেলা ২টো থেকে রাত ৯টা)।
ফটো সৌজন্য
দি হিন্দু
ওড়িশা টুরিজম
ওড়িশা ইকোটুর