১৪-১৫ দিন সময়ে বেশ বেড়ানো যায় গুজরাট। সেই ভ্রমণের মানচিত্রে একইসঙ্গে থাকতে পারে সমুদ্র, অরণ্য, নোনা মরুভূমি, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির নানা দিক। কী ভাবে বেড়াবেন, কোথা থেকে কোথায় যাওয়া যেতে পারে, কোথায় রাত্রিবাস সুবিধাজনক, সে-সব তথ্য-সহ নিজ অভিজ্ঞতা ও বিচার-বিবেচনার ভিত্তিতে গুজরাট বেড়ানোর একটি পরিকল্পনা তথা সূচি তৈরি করছেন ভ্রামণিক-লেখক তুষার পাত্র।
এই টুর প্ল্যানে রেলপথকেই যাতায়াতের ব্যবস্থা হিসেবে ধরে নিয়ে সময়ের হিসেব কষা হয়েছে। উভয় পিঠেই বিমানে অথবা একপিঠে ট্রেন ও অন্যপিঠে বিমানে যাতায়াতের ব্যবস্থা হলে বেড়ানোর সময় দু’একদিন বাড়িয়ে নেওয়া যেতে পারে, সময় সংক্ষেপিতও হতে পারে।
ভ্রমণ সূচি
প্রথম দিন: হাওড়া থেকে রাত্রি ১০.৫০-এর (১২৯০৬) পোরবন্দর এক্সপ্রসে আমেদাবাদের উদ্দেশে যাত্রা।
দ্বিতীয় দিন: ট্রেনে।
তৃতীয় দিন: আমেদাবাদে নেমে সোজা হোটেলে।। তারপর দেখব গান্ধী আশ্রম, কাংকরিয়া লেক, অদালাজ স্টেপ ওয়েল (ধাপ-কূপ) এবং অক্ষরধাম মন্দির।।আমেদাবাদে রাত্রিবাস।
চতুর্থ দিন: আজ শাসন গিরের (গিরের সম্পূর্ণ নাম) উদ্দেশে যাত্রা। দূরত্ব ৩২৫ কিলোমিটার। আমেদাবাদ থেকে ট্রেন, বাস, ট্যাক্সি পাওয়া যাবে। এশীয় সিংহের আবাস গিরের অরণ্য তথা জাতীয় উদ্যান। এ দিন গিরে রাত্রিবাস।
পঞ্চম দিন: আজ সকালে গির অরণ্যে জঙ্গল সাফারি। লাঞ্চের পর সোমনাথের উদ্দেশে রওনা দেওয়া। পথে দেখব ভলকা তীর্থ, ত্রিবেনী ঘাট এবং গীতা মন্দির।সন্ধ্যেবেলায় সোমনাথ মন্দিরের সন্ধ্যারতি দেখে গিরে ফিরে আসা এবং গিরে রাত্রিবাস।
ষষ্ঠ দিন: আজ সকালে আমরা যাব দিউ। দেখব নাগোয়া বিচ মিউজিয়াম এবং দিউ ফোর্ট । দিউ থেকে ফিরে এসে গিরেই রাত্রিবাস।
সপ্তম দিন: আজ আমরা যাব দ্বারকায়। দূরত্ব ২৪৮ কিলোমিটার। ট্রেন, বাস পাবেন। ট্যাক্সিতে গেলে পথে পোরবন্দরে কীর্তি মন্দির (গান্ধিজির জন্মস্থান) দেখে নেওয়া যেতে পারে। দ্বারকায় পৌঁছে ওখানেই রাত্রিবাস।
অষ্টম দিন: আজ আমরা দেখব বেট দ্বারকা, নাগেশ্বর মন্দির এবং রুক্ষ্মিণী দেবীর মন্দির। সন্ধ্যেবেলায় দ্বারকা মন্দিরে সন্ধ্যারতি দেখতে পারেন। দ্বারকায় রাত্রিবাস।
নবম দিন: দ্বারকা থেকে ভুজের উদ্দেশে যাত্রা। দূরত্ব ৪০০ কিলোমিটার। ট্রেন-বাস দুই-ই আছে। পৌঁছে সন্ধ্যে বেলায় স্বামীনারায়ণ মন্দির দর্শন। ভুজে রাত্রিবাস।দ্বারকা থেকে ভুজ যাওয়ার রাতের বাসও পাওয়া যায়।
দশম দিন: আজ আমরা দেখব কচ্ছের রান। ভুজ থেকে দূরত্ব ৫৭ কিলোমিটার। পায়ে হেঁটে আর উটের পিঠে চড়ে রানের সাদা নুনের মরুভূমিতে বেড়ানোর রোমাঞ্চের সঙ্গে থাকবে নিজের মতো করে আবিষ্কার। পূর্ণিমার রাতে এই সাদা মরুভূমি দেখার জন্য দেশ-বিদেশের হাজির হন কচ্ছের রানে। এ দিন ভুজে রাত্রিবাস।
একাদশ দিন: ভুজ থেকে লাঞ্চ করে বেরিয়ে পড়ব। গন্তব্য গান্ধিধাম জংশন স্টেশন। শনিবার বিকেল ৫.৪০ মিনিটে হাওড়াগামী গর্বা এক্সপ্রেস অথবা মঙ্গলবার বিকেল ৩.৫৫ মিনিটে শালিমার সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ধরুন এখান থেকে। যদি অন্য দিন হয় তা হলে খুব সকালে বেরিয়ে আমেদাবাদ যেতে হবে। দূরত্ব ৩৩০কিলোমিটার। আমেদাবাদ থেকে বিকেল ৫.১৫ মিনিটে ১২৯০৫ হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ধরুন।
ত্রয়োদশ দিন: হাওড়ায় পৌঁছানো।
আরও দু’দিন বেশি বেড়ানোর অবকাশ থাকলে আমেদাবাদ থেকে ভদোদরা গিয়ে ‘স্ট্যচু অফ ইউনিটি’ দেখে আসতে পারেন।