Follow us
Search
Close this search box.

সিকিমের পাঁচ অফবিট ঠিকানা

সিকিমের পাঁচ অফবিট ঠিকানা

ইয়াংতে

পশ্চিম সিকিমে পেলিংয়ের কাছাকাছি ৬০০০ ফুট উচ্চতায় ইয়াংতে গ্রামটি সিকিমের প্রায় সদ্যপরিচিত একটি বেড়াতে যাওয়ার ঠিকানা। ইয়াংতেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার ব্যালকনি বললে অত্যুক্তি হবে না। শুধু তো কাঞ্চনজঙ্ঘা নয়, ইয়াংতে থেকে পাণ্ডিম, রাথোং, ফ্রে, কাব্রু ডোমের শৃঙ্গাবলীও দেখা যায়। ব্যস্ত পেলিংয়ের কাছাকাছি হলেও ইয়াংতে নিভৃতে থাকা এক শান্ত সৌন্দর্য। প্রাণ ভরে শ্বাস নেওয়া যায় এখানে।

এরকম পরিবেশে শান্ত, সমাহিত পেমায়ানসে মনাস্ট্রি খুব মানিয়ে যায়। এই মনাস্ট্রির প্রাচীন চিত্রকলার সংগ্রহ দেশের মূল্যবান সম্পদ। কাছেই ঐতিহাসিক জায়গা রাবডেন্সে। সিকিমের দ্বিতীয় পূর্ববর্তী রাজধানী। এই রাবডেন্সে থেকেও কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ মনে গেঁথে থাকে। ইয়াংতে থেকে বেড়িয়ে আসা যায় পেলিং, রিম্বি জলপ্রপাত, কাঞ্চনজঙ্ঘা জলপ্রপাত, খেচিপেরি লেক।

যাওয়ার পথ

এন জে পি স্টেশন চত্বর বা শিলিগুড়ি থেকে গোটা গাড়ি ভাড়া করে ইয়াংতে চলে আসা যায়। শিলিগুড়ি থেকে শেয়ার গাড়িতে পেলিং এসে সেখান থেকে প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করে ইয়াংতে আসা যেতে পারে। পেলিং থেকে ইয়াংতে ৯ কিলোমিটার। গ্যাংটক থেকে পেলিং যাওয়ার শেয়ার গাড়ি পাওয়া যাবে।

থাকার ব্যবস্থা

তাসিগং রিসর্ট, ফোন ৯৭৭৫৮ ২২৫২২, ৯৮৭৪৪ ৪০০০৩। নরবুলিংকা রিট্রিট, ফোন ৮১৪৫৭ ৩০১৮০।

ইয়াকতেন

পূর্ব সিকিমের ছোট্ট একটা গ্রাম। ছবির মতো। ৫৩০০ ফুট উচ্চতায় ইয়াকতেনে যত্রতত্র প্রজাপতি ওড়ে। সবুজ অ্যালপাইন জঙ্গল দেখে চোখ জুড়িয়ে যাবে। পাহাড়ের ধাপে চাষবাস। গ্রামে, জঙ্গলে নানা প্রজাতির পাখির দেখা পাওয়া যাবে। আকাশের গায়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা। ইতিউতি চোখে পড়বে অর্কিড। সিকিমের রাজধানী গ্যাংটক থেকে ইয়াকতেন ৩৫ কিলোমিটার।

ইয়াকতেন থেকে ঝান্ডি দাড়া ৭ কিলোমিটার। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে ট্রেক করে চলে যান। ঝান্ডি দাড়া তুষারাবৃত কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার চমৎকার একটি ভিউপয়েন্ট। এখানে একদিকে যদি থাকে ভুটিয়া দুর্গের ধ্বংসাবশেষ, তবে দূরে অন্যদিকে থাকবে ঝকঝকে কাঞ্চনজঙ্ঘা। আর দিনে দিনে বেড়িয়ে আসা যায় গ্যাংটক শহর থেকে। সিকিমের পর্যটন মানচিত্রে ইয়াকতেন একটি নতুন সংযোজন। দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

যাওয়ার পথ

এন জে পি অথবা শিলিগুড়ি থেকে পুরো গাড়ি ভাড়া করে বা শেয়ার গাড়িতে গ্যাংটক পৌঁছে সেখান থেকে আলাদা গাড়ি ভাড়া করে চলে আসুন ইয়াকতেন। এন জে পি থেকে ইয়াকতেন ১৪০ কিলোমিটার।

থাকার ব্যবস্থা

ইয়াকতেন প্যারাডাইস হোমস্টে, ফোন ৭৯০৮১ ১২৬১০। অর্কিড হোমস্টে ফোন ৯০০৭৬ ১২০১৫

জুম

জুমে যাওয়া মানে নির্ভেজাল পাহাড়ি প্রকৃতির অভ্যন্তরে ঢুকে পড়া। রঙ্গীত নদীর তীরে জুম থেকে দেখবেন পাহাড়ের পর পাহাড়ে সবুজের ঢেউ। জৈব চাষের জন্য নাম করেছে জুম। খাওয়ার টেবিলে পরিবেশিত হবে বিষমুক্ত খাদ্য। কমলালেবুর কিছু বাগান আছে জুমে। ট্রেক করে যেতে পারেন জুম ভিউপয়েন্টে। সেই ভিউপয়েন্ট থেকে চারপাশের পাহাড় আর উপত্যকার দৃশ্যপট যেন এক কল্পনার জগৎ। চলে যেতে পারেন রঙ্গিতের তীরে। রঙ্গিত তিস্তার একটি শাখা-নদী। বেড়িয়ে আসতে পারেন জোরথাং থেকেও। দক্ষিণ সিকিমের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর জোরথাং।

যাওয়ার পথ

শিলিগুড়ির তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাস চত্বর থেকে জোরথাং যাওয়ার শেয়ার গাড়ি পাওয়া যায়। জোরথাং থেকে জুম ৬ কিলোমিটার। শিলিগুড়ি থেকে জুম ৯০ কিলোমিটার।

থাকার ব্যবস্থা

রাই হোমস্টে, ফোন ৮১৭০৯ ৪৮৪৫৮।

চালামাথাং

সবুজ পাহাড়ের ঢেউ। উপত্যকার মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে তিস্তা। অ্যালপাইন জঙ্গলে নানা জাতের পাখি। সিকিমের দক্ষিণাংশে চালামাথাং বেড়ানোর জায়গা হিসেবে পরিচিতি পেতে শুরু করেছে কিছুদিন হল। সিকিমের একমাত্র চায়ের বাগান টেমি টি গার্ডেন চালামাথাং থেকে ১৭ কিলোমিটার। কাছেই তারেভির। ১০ হাজার ফুট উচ্চতায় পাহাড়-খাদের কিনার ধরে চলার পথ। সেই পথ ধরে চলতে চলতে পাহাড়, বিস্তৃত উপত্যকা, তিস্তা নদীর চলন দেখে থমকে দাঁড়িয়ে পড়তে হয়। বেড়িয়ে আসা যায় রাবাংলা থেকেও।

যাওয়ার পথ

এন জে পি অথবা শিলিগুড়ি থেকে গোটা গাড়ি ভাড়া করে চালমাথাং চলে আসা যায়। এন জে পি বা শিলিগুড়ি থেকে শেয়ার গাড়িতে গ্যাংটক পৌঁছে সেখান থেকে পুরো গাড়ি ভাড়া করে চালমাথাং চলে আসা যাবে।

থাকার ব্যবস্থা

চালমাথাং হোমস্টে, ফোন ৯৯৩৩৩ ৬৭৬৮৩।

সিংঘিক

উত্তর সিকিম জেলার প্রধান শহর মঙ্গন। এই মঙ্গন থেকে সিংঘিক ৪ কিলোমিটার। গ্যাংটক থেকে সিংঘিক ৫৬ কিলোমিটার। ৫১২০ ফুট উচ্চতায় সিংঘিক থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা, মাউন্ট সিনিয়লচু, মাউন্ট পাণ্ডিম ও মাউন্ট কাব্রু ও সেইসঙ্গে সবুজ উপত্যকার মধ্যে দিয়ে তিস্তা নদী-প্রবাহের অপরূপ দৃশ্য সহজে ভোলবার নয়। উত্তর সিকিমের এই অঞ্চলটিতে লেপচা জনজাতির বসবাস। লেপচাদের ঘরবাড়ি, তাঁদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি কাছ থেকে দেখা যায় সিংঘিকে দুটো দিন কাটালে। সিংঘিকের তেনসং মনাস্ট্রিটিও দেখতে হবে। বেড়িয়ে আসতে পারেন চার কিলোমিটার দূরের ছোট্ট ও শান্ত এলাকা মঙ্গন থেকে। যেতে পারেন সিনঘিক থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরের লেপচা-অধ্যুষিত জংগু উপত্যকায়। সেভেন সিস্টারস ফলস সিনঘিক থেকে গাড়িতে ঘন্টাখানেকের পথ।

সিনঘিকের পাশ দিয়ে উত্তর সিকিম হাইওয়ে চুংথাং হয়ে গেছে লাচুং ও লাচেনের দিকে। লাচুং থেকে ইয়ুমথাং ভ্যালি ও লাচেন থেকে গুরুদোংমার বেড়াতে যাওয়া হয়। সিনঘিক থেকে লাচুং ৪৭ ও লাচেন প্রায় ৫২ কিলোমিটার। লাচুং বা লাচেনে একটা রাত কাটিয়ে পরের দিন সকালে ইয়ুমথাং বা গুরুদোংমার যেতে হয়।

যাওয়ার পথ

গ্যাংটক থেকে সিংঘিক ৫৬ কিলোমিটার। এন জে পি স্টেশন থেকে সিংঘিক ১৪৪ কিলোমিটার। শিলিগুড়ি বা এন জে পি থেকে শেয়ার গাড়িতে গ্যাংটক পৌঁছে সেখান থেকে প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া ৫৬ কিলোমিটার দূরের সিংঘিক পৌঁছে যেতে পারেন। চাইলে গ্যাংটক থেকে শেয়ার গাড়িতেও সিংঘিক যাওয়া যেতে পারে। আর এন জে পি বা শিলিগুড়ি থেকে সরাসরি সিংঘিক পুরো গাড়ি ভাড়া করে তো আসাই যায়।

থাকার ব্যবস্থা

সিংঘিক টুরিস্ট বাংলো, ফোন ৯৬৩৫৮ ৩৯৯৩৯, ৯৮১৮৮ ২৭৭২০।
লাজোমলা হোমস্টে, ফোন ৮৪৩৬২ ৮২৮৫৯, ই-মেলঃ lazomlahomestay@gmail.com আমা হোমস্টে, ফোনঃ ৯৬০৯৮ ১২৪৯৮।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *