এই বর্ষায় গেরুয়ারঙা মাটি বর্ণে আরও গভীর। বৃষ্টিতে সেই মাটিতে সবুজের সমারোহ। শহুরে মানুষ বিস্তৃত সেই সবুজের সমারোহের মধ্যে দাঁড়িয়ে প্রথমে অবাক হন, তারপর ক্রমশ সেই পরিবেশের সঙ্গে একাত্ম হয়ে ওঠেন। এখানকার বাতাসে অন্য এক সুর। বাউলিয়া সুর বলা চলে। বর্ষায় সেই বাতাসে সোঁদা মাটির আঘ্রাণ।
বীরভূমের দ্বারন্দা। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে অজয়। বর্ষায় ভরভরন্ত সে নদী। ভালো বৃষ্টিতে খেতভরা সবজি। বাগানভরা ফুল। বর্ষায় রাঢ়বঙ্গের মানুষের মুখে হাসি। ফসল ভালো হলে আদিবাসী মেলায় প্রাণের উচ্ছ্বাস। গ্রীষ্মে দখিনা বাতাসে প্রাণ জুড়োয়। বর্ষায় অজয়ের ওপার থেকে ধেয়ে আসে মেঘপুঞ্জ। দিগন্ত জুড়ে বর্ষামঙ্গল। শরতে দিঘির পাড়ে কাশের ঝালর দোলে। দূরে ঢাকের বাদ্যি। ঋতুর পরিবর্তনে বদলে যায় প্রকৃতি। বদলে যায় পৃথিবীর রূপ। আমাদের জন্য।
কোথায় থাকবেন এমন পরিবেশে? আছে খেয়াতরী ফার্মহাউস। বিস্তৃত এলাকা জুড়ে চাষবাস সেখানে। জৈব পদ্ধতিতে নানা সবজির চাষ হয় খেয়াতরীর জমিতে। বাগানে ফুলে ফুলে আলোর রোশনাই। ছড়ানো ছেটানো বাড়িঘর। অতিথিদের গল্পগুজবের জন্য আড্ডাঘর। খাওয়ার টেবিলে বাঙলার খাদ্য-ঐতিহ্যের আন্তরিক ছোঁয়া।
চাইলে অল্পসল্প দক্ষিনার বিনিময়ে কোনও বাউল ভাই এসে গান শুনিয়ে যাবেন। গল্পগুজব হবে। মন চাইলে লালমাটির পথ ধরে চলে যান না আশেপাশের কোনও গ্রামে। হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে দাঁড়াতে পারেন অজয়ের তীরে।
বোলপুর স্টেশন থেকে খেয়াতরী ১০ কিলোমিটার। খেয়াতরী থেকে শান্তিনিকেতন ৮ কিলোমিটার, খোয়াই ৮ কিলোমিটার, শ্রীনিকেতন ৬ কিলোমিটার, বোলপুর ১০কিলোমিটার, কঙ্কালীতলা দেড় ঘন্টার পথ। বেড়ানোর জন্য গাড়ি পাবেন ফার্মহাউস থেকে, নায্য ভাড়ার বিনিময়ে।
যাওয়ার পথ
ট্রেনে বোলপুর স্টেশনে নেমে সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে দ্রুত খেয়াতরী পৌঁছে যেতে পারেন। গাড়ি নিয়ে গেলে দুর্গাপুর হাইওয়ে ধরে শক্তিগড় ছাড়িয়ে রেনেসাঁ মোড় থেকে ডানহাতি রাস্তা ধরে খানিকটা এগিয়ে ইলমবাজারগামী বাঁ-হাতি রাস্তা ধরতে হবে। ইলমবাজার থেকে বাঁ-দিকের রাস্তা ধরে একটু এগলেই দ্বারন্দা, খেয়াতরী।
খেয়াতরী ফার্মহাউসের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বরঃ ৯০৫১৭১৯৯০৩, ৯৭৪৮০০১২৬৮।