Follow us
Search
Close this search box.

ভুটান ভ্রমণঃ শেষ লপ্তে পারো, হা ভ্যালি

ভুটান ভ্রমণঃ শেষ লপ্তে পারো, হা ভ্যালি

কাল সন্ধ্যায় ভুটানের রাজধানী থিম্পু বেড়িয়ে পারোয় এসে পৌঁছেছি সন্ধ্যায়। আজ (১৬ অক্টোবর, ২০২৪) পারোয় সাইটসিয়িং। সকাল সকাল ব্রেকফাস্ট সেরে বেড়িয়ে পড়া গেল। প্রথমে গেলাম কায়িচু লাখাংয়ে। তিব্বতের রাজা সংসেন গাম্পো সপ্তম শতকে এই বৌদ্ধ মন্দিরটি তৈরি করিয়েছিলেন। ভুটানের প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দিরগুলির একটি এই মন্দিরটি। ওখানে পৌঁছে জানা গেল, মন্দিরে ভি আই পি’দের দর্শন চলছে। আমাদের দর্শন হল না। প্রসঙ্গত, ভুটান সরকার বিদেশী পর্যটকদের কাছ থেকে সে-দেশে বেড়ানো, থাকার জন্য প্রতিদিন পর্যটকপিছু আলাদা ফি নিয়ে থাকে। সে-কথা জানিয়েছি ভুটান-বিষয়ক প্রথম পর্বের লেখায়। যাই হোক, মন্দিরের তিব্বতি ঘরানার পরিবেশ, অলংকরণ, মূর্তি ইত্যাদি দেখার ইচ্ছে ছিল। হল না।

এরপর গিয়েছিলাম তা জং। নজরমিনার হিসেবে নির্মিত হয়েছিল। এখন জাতীয় স্তরের একটি সংগ্রহশালা। রিনপুং জং গিয়েছিলাম। দ্রোকপাদের দুর্গ ও উপাসনাস্থল এটি। পাহাড়ি পরিবেশ। অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্য।

পরের দিন পারো বিমানবন্দর দেখতে গিয়েছিলাম। ভুটানের একমাত্র আন্তুর্জাতিক বিমানবন্দর। এই বন্দর থেকে বিমানের টেক অফ ও বন্দরে ল্যান্ডিংয়ের জন্য দক্ষ পাইলটের দরকার হয়। দুটো পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে বিমান ওঠানামা করে। একটা চমৎকার ভিউ পয়েন্ট থেকে পারো বিমানবন্দর, বিমানের উড়ান ও অবতরণ দেখতে বেশ লাগে।

ভুটান ভ্রমণঃ প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের লেখা পড়তে পারেন নীচের দুই লিঙ্কে –

https://torsa.in/bhutan-tour-part-one/

https://torsa.in/thimpu-to-paro/

পারো বিমানবন্দর থেকে গিয়েছিলাম চেলে-লা। হা ও পারো উপত্যকার মধ্যে এটি একটি পাস। উচ্চতা ১৩,০০০ ফুট। গাড়ি চলাচল করে এই পাস ধরে। চেলে-লা থেকে হিমালয়ের অসাধারণ সব দৃশ্য চাক্ষুষ করা যায়। পারো থেকে চেলে-লা ৪৫ কিলোমিটার।

চেলে-লা থেকে হা ভ্যালি ২২ কিলোমিটার। আমরা চলে এলাম হা উপত্যকায়। যেন এক অন্য জগতে প্রবেশ করলাম। ইংরেজি ভাষায় হা উপত্যকার আরেক নাম ‘হিডেন ল্যান্ড রাইস ভ্যালি’। হাচু নদী বয়ে চলেছে উপত্যকার মধ্যে দিয়ে। হা উপত্যকার ফসলের প্রাচুর্যের নেপথ্যে রয়েছে এই নদীটি। জুমলহরি পাহাড় থেকে নেমে এসেছে এই হাচু নদী। জুমলহরি ভুটানের দ্বিতীয় উচ্চতম পর্বত। হা ভ্যালি পর্যটকদের কাছে অবশ্য দর্শনীয়, এ কথা বলতে কোনও দ্বিধা নেই আমার। হা জং, শ্বেত মন্দির দেখা হল। লাখাং নাগপোও দেখা হল। লাখাং নাগপোর ইংরেজি নাম ‘ব্ল্যাক টেম্পল’। নাম এমনটি হলেও এই ব্ল্যাক টেম্পল জীবনের আঁধার দূর করে, বিশ্বাস আঞ্চলিক মানুষজনের। সারাদিন বেড়িয়ে সন্ধ্যায় পারো ফিরলাম।

১৮ অক্টোবর সকালে পারো থেকে ফুন্টশেলিংয়ের উদ্দেশে রওনা হওয়া গেল। দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার। ফেরার পথে পারো চু নদীর পারে একটু ঘোরাঘুরি হল। তারপর আবার যাত্রা। ফুন্টশেলিংয়ে লাগেজ স্ক্যান হওয়ার পরে ভারতের সীমানায় পা রাখা গেল। দুপুরে জয়গাঁও পৌঁছালাম। লাগেজ নিজেদেরই বইতে হয়েছিল। জয়গাঁওয়ের হোটেল কস্তুরীতে লাঞ্চ হল। ফিরব নিউ আলিপুরদুয়ার। রাত ৭-৪০-এর পদাতিক এক্সপ্রেসে গৃহপানে যাত্রা।

ফটোঃ উপর থেকে চতুর্থ (হা ভ্যালি) সৌজন্যঃ দ্রুক এশিয়া।
অন্য সবকটি ফটো তুলেছেন লেখক।

ফটো ১ (হেডার ফটো)-পারো বিমানবন্দর।
ফটো ২ঃ রিনপুং জং।
ফটো ৩ঃ চেলে-লা পাস।
ফটো ৪ঃ হা ভ্যালি।
ফটো ৫ঃ পারো চু তথা পারো নদী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *