বঙ্গোপসাগরের এক ভিন্নতর রূপ চাক্ষুষ করার সুযোগ রয়েছে ওড়িশার বালাসোর বা বালেশ্বর জেলার চাঁদিপুরে। বর্ষায় সে রূপ আরও খোলে। ভাটায় বৃষ্টিভেজা ধূ ধূ বালিয়াড়ি। বৃষ্টিভেজা বাতাস। ভেজা কেয়াঝোপ। সে এক অন্য পরিবেশ।
সমুদ্র এখানে লুকোচুরি খেলে। ভাটায় সমুদ্রের জল চলে যায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে। তখন ভিজে বালির ওপর দিয়ে হেঁটে চলে যাওয়া যায় অনেকটা দূর পর্যন্ত। এখানে সেখানে আটকে পড়া জলে চোখে পড়তে পারে স্টার ফিশ, অশ্বক্ষুরাকৃতির কাঁকড়া ( হর্স শু ক্র্যাব), চেনা-অচেনা সামুদ্রিক মাছ, সামুদ্রিক উদ্ভিদ। তবে জোয়ার শুরুর সময়টিকে মাথায় রেখে সেই বালিয়াড়ির ওপর দিয়ে কতটা হাঁটবেন তা ঠিক করে নিতে হবে।
জোয়ারে আবার অন্য ছবি। তখন জলের লুটোপুটি আপনার পায়ের কাছে। ওড়িশা পর্যটনের পান্থনিবাসের কাছে সমুদ্রতীর বেশ সাজানোগোছানো। বসার জন্য বেঞ্চ আছে। কোনও বেঞ্চে বসে বিশ্রাম নিন, সমুদ্র দেখুন। খাবারের স্টল পাবেন। জোছনায় এ সমুদ্র খুব রোমান্টিক। আর পূর্ণিমায় সমুদ্রের উপরে চাঁদ ভেসে থাকে ফানুসের মতো।
পান্থনিবাস থেকে পুর্ব দিকে হাঁটতে থাকলে ঘন সব কেয়াঝোপ চোখে পড়বে। সকালের দিকে ভাটার সময় সমুদ্র খাতের ভিজে বালির ওপর দিয়ে হাঁটুন। বালির ধূ ধূ প্রান্তর, কেয়াবন, নির্জনতা, এ সবই চাঁদিপুর সৈকতের নিজস্ব বৈশিষ্ট। হাঁটতে হাটঁতে বা একটা অটোতে করে চলে যেতে পারেন বুধবলঙ্গা নদীর সঙ্গমে। জায়গাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবশ্যই ভালো লাগবে।
চাঁদিপুর ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষামূলক ক্ষেপনাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্রও বটে। চাঁদিপুরের ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট রেঞ্জ থেকে আকাশ, অগ্নি, পৃথ্বীর মতো বিভিন্ন ক্ষেপনাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ হয়েছে।
চাঁদিপুর থেকে দিনে দিনেই বেড়িয়ে আসতে পারেন পঞ্চলিঙ্গেশ্বর। ঘন সবুজ পাহাড়ের উপরে খুব সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে রয়েছে পঞ্চলিঙ্গেশ্বর ও বনদেবীর মন্দির। চাঁদিপুর থেকে পঞ্চলিঙ্গেশ্বর ৩৫ কিলোমিটার। মন চাইলে একটা দিন পঞ্চলিঙ্গেশ্বরে থাকতে পারেন। সবুজ পঞ্চলিঙ্গেশ্বরের আরেকপ্রকার সৌন্দর্য। একটা দিন এখানে কাটাতে ভালো লাগবে।
যাওয়ার পথ
হাওড়া থেকে ধৌলী এক্সপ্রেস, ফলকনামা এক্সপ্রেস, পুরী এক্সপ্রেস প্রভৃতি ট্রেন বালাসোর যায়। বালাসোর যাওয়ার জন্য ধৌলী এক্সপ্রেস ট্রেনটি খুব সুবিধাজনক। সকাল ৬টা নাগাদ হাওড়া থেকে ছেড়ে ৯ঃ৪০ নাগাদ ট্রেনটি বালাসোর পৌঁছে যায়।
থাকার ব্যবস্থা
ওডিশা পর্যটনের পান্থনিবাস, ফোনঃ ০৬৭৮২২৭০০৫১। হোটেল শুভম,ফোনঃ ০৬৭৮২২৭০২২৫। অর্পিতা বিচ রিসর্ট, ফোনঃ ০৭৫০৪৮৩৮৮৮৪। হোটেল শান্তিনিবাস, ফোনঃ ৯৮৫৩৮৭০১১৯। হোটেল স্টারওয়ে, ফোনঃ ৮৭৬৩০৪৭০০০।
পঞ্চলিঙ্গেশ্বরে থাকতে চাইলে
রূপার্ক ভিলেজ রিসর্ট, ফোনঃ ০৮৯৬১০৬৬৬৬৯। হোটেল গুরুশক্তি, ফোনঃ ০৮৪৫৭০৪১৭২১। মহেন্দ্র নিবাস, ফোনঃ ৯৯৩৭১৯৩৩৫১।