Follow us
Search
Close this search box.

জয়সলমেরে মরু উৎসব

জয়সলমেরে মরু উৎসব

থর মরুভূমিতে বর্ণাঢ্য উৎসব। মরু মহোৎসব। ২০২৬-এ মরু উৎসব আয়োজিত হবে ৩০ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি, রাজস্থানের জয়সলমিরে। শীতে রাজস্থানের সব পর্যটন কেন্দ্রেই ভ্রমণার্থীদের ভিড় জমে। মরু-শহর জয়সলমের এমনিতেই পর্যটকদের কাছে এক প্রবল আকর্ষণীয় ভ্রমণ কেন্দ্র। শীতের উৎসবে জ্বলে ওঠে থর মরুভূমির জয়সলমের শহর।

রাজস্থানের পশ্চিমাংশে প্রায় ২ লক্ষ বর্গ-কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে ভারত ও পাকিস্তানের সিন্ধ অঞ্চলের মধ্যে থর মরুভূমির বিস্তার। সোনালি বালির ধূ ধূ মরুভুমি, বালির পাহাড়ের ঢেউ, কোথাও খেজরি গাছের ঝোপঝাড়, মরুভূমির কত রহস্য। এদিকে-সেদিকে বসবাস রয়েছে থারী, বিষ্ণোই, ভিল, বানজারা গোষ্ঠীর মানুষের। স্থায়ী গ্রাম আছে। রবারি, বানজারারা এখনো স্থান পালটে অনেকে মিলে থাকতে ভালোবাসেন। যাযাবরের জীবন। সেইসব জীবনযাত্রার অনেকটা আঁচ পাওয়া যায় মরু উৎসবে।

উৎসবের মূল আসরটি বসবে মরু-শহর জয়সলমেরে,’সোনার কেল্লা’র শহরে। রাজধানী শহর জয়পুর থেকে জয়সলমের কমবেশি ৬০০ কিলোমিটার। ট্রেন, সড়ক, উভয় পথেই যাওয়া যায়।

জয়সলমেরের দুর্গ ৮০০ বছরের বেশি পুরনো। সেই কেল্লাকে ঘিরে থর মরুভূমির মধ্যে ক্রমশ গড়ে উঠেছে আজকের মরু-শহর জয়সলমের। দুর্গ তৈরি করিয়েছিলেন রাওয়াল জয়সল। ভাতি বা ভাটি গোষ্ঠীর রাজপুত নেতা ছিলেন। জয়সলমের রাজবংশের পত্তন করেছিলেন তিনি। কেল্লা ও শহর পত্তনের পরে মরুভূমির মধ্যে দিয়ে দূরান্ত থেকে যাতায়াত শুরু হল ক্যারাভানের দলের। পারস্য থেকে বণিকরা আসত জয়সলমের শহরে। বাহন উটের দল। শহরটি ‘সোনার শহর’ নামে খ্যাত ছিল মধ্যযুগে। এখনো জয়সলমেরকে ‘গোল্ডেন সিটি’ বলা যায়। মুম্বইয়ের সমুদ্র বন্দর গড়ে ওঠার পর থেকে বাণিজ্য নগরী হিসেবে জয়সলমেরের পতন শুরু হয়।

বর্তমানে জয়সলমের রাজস্থানের একটি জেলা। সময় যেন থমকে আছে এ শহরে। বিশাল সোনার কেল্লাই একটা ছোটখাটো শহর, সেইসঙ্গে প্রাচীন মন্দির, মধ্যযুগীয় হাভেলি, শান্ত লেক, পুরনো সব বাজার, ঐতিহ্যময় সংস্কৃতি, সব মিলিয়ে অতীত ও বর্তমানের মধ্যে এক অবাক করা মেলবন্ধন ঘটেছে এ শহরে। খোলা আকাশের নীচে এক জীবন্ত মিউজিয়াম যেন।

বার্ষিক মরু-উৎসবে আলোর সাজে সেজে ওঠে জয়সলমের। ঘুমর, কলবেলিয়া নৃত্যের ছন্দে, কেশরিয়া বালম, চিরমির মতো ঘরানার লোক সংগীতের সুরে নতুন করে জাগে যেন শহরটা। উটের বর্ণময় শোভাযাত্রা, গোঁফের প্রতিযোগিতা, আতসবাজির রোশনাই দেখে তাক লেগে যায় দেশি-বিদেশি পর্যটকদের।

সঙ্গে থাকতে পারে উটের পিঠে বা জিপে চড়ে মরুভূমিতে বেড়াতে যাওয়া। চাইলে ক্যাম্পে রাত কাটানো যায় মরুভূমিতে। চাঁদনি রাতে মরুভূমিতে কাটানোর অভিজ্ঞতা জীবনভর মনে থাকবে।

ফটো সৌজন্য
সর্বোচ্চ ফটোঃ টিটলি।
অন্যান্য ফটোঃ ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া।

Comments are closed.