তুষার পাত্র
এক তেলেগু সহকর্মীর কাছে অন্ধ্রপ্রদেশের চিরালার সৈকতের কথা শুনেছিলাম। ২০২৪-এর অক্টোবর মাসে যাওয়ার ছিল বিজয়ওয়াড়ায়। ঠিক করেছিলাম, বিজয়ওয়াড়া থেকে চিরালায় যাব।
গাড়িতে বিজয়ওয়াড়া থেকে অন্ধ্রপ্রদেশের প্রকাশম জেলার অন্তুর্ভুক্ত উপকূলবর্তী চিরালা শহর ১০০ কিলোমিটার। দক্ষিণ ভারতগামী প্রায় সমস্ত ট্রেনই চিরালার উপর দিয়ে যায়। তবে সব ট্রেন এখানে থামে না। চিরালা স্টেশন থেকে বিচের দূরত্ব ৮ কিলোমিটার।
সত্যি কথা বলতে কী, একটু ভয়ে ভয়েই চিরালায় এসে পৌঁছেছিলাম। কেমন হবে জায়গাটা, কেমন সৈকত, প্রশ্নগুলো ঘুরপাক খাচ্ছিল মনের মধ্যে। তারপর বিস্মিত হওয়ার পালা এবং সেই বিস্ময়ের ঘোর কাটতে সময় লেগেছিল।
চিরালার রামাপুরম সৈকত অঞ্চলটি যেন একটা ছবি। নৈসর্গিক সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতার নিরিখে চিরালার সৈকত এক লুকিয়ে থাকা রত্ন বিশেষ, এ কথা বলতে আমার কোনও দ্বিধা নেই। সুদীর্ঘ নিরালা সৈকতে বেড়িয়ে শান্তি পাওয়া যায়। এখানে সমুদ্র গভীর। ফেনিল তরঙ্গমালার উদ্দামতা আর ঢেউয়ের গর্জন এ সৈকতের আরেকটি বৈশিষ্ট্য।
দীর্ঘ সমুদ্রতীর বরাবর হাতে গোনা কয়েকটি হোটেল। উপকূল আইন অনুসারে তৈরি হয়েছে হোটেলগুলো। সৈকতের তীর ধরে রাস্তা। রাস্তার ওপারে হোটেল। পর্যটকরা যে যাঁর হোটেলের সামনের বেলাভূমিতে সময় কাটাচ্ছেন নিজেদের মতো করে। হৈ-হট্টগোলের বালাই নেই। মৎস্যজীবীরা তাঁদের কাজ নিয়ে থাকেন। সপ্তাহান্তে বিজয়ওয়াড়া, হায়দ্রাবাদ থেকে লোকজন আসেন ছুটি কাটাতে, বিশ্রাম নিতে। নিখাদ বিশ্রাম নেওয়ার জন্য একেবারে আদর্শ একটি ঠিকানা চিরালার সৈকতভূমি।
চিরালার সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে। সপ্তদশ শতকে চিরালা নামী বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল। মুঘল, কুতুব শাহি, ফরাসি, ব্রিটিশদের আধিপত্য ছিল ছোট্ট চিরালা শহরটি। সেইসব ধারা তাদের নানা চিহ্ন রেখে গেছে।
অক্টোবর থেকে মার্চ মাস চিরালার সৈকত বেড়ানোর আদর্শ সময়।
চিরালার কয়েকটি হোটেল
শ্রীনিবাস গ্র্যান্ড, ফোনঃ 099852 61111
গোল্ডেন সোয়ান বিচ রিসর্ট, ফোনঃ 092255 91132
সি ব্রিজ বিচ রিসর্ট, ফোনঃ 098499 60727
হ্যাপি ডেজ বিচ রিসর্ট, ফোনঃ 088866 65146
দি হাটস রিসর্ট, ফোনঃ 099492 55678
ভি ভিলা – চিরালা, ফোনঃ 097034 45599
বালা রেসিডেন্সি, ফোনঃ 085942 33464
ফটো লেখক।