বর্ষায় ওড়িশার কোরাপুট ও ছত্তিশগড়ের চিত্রকোট ও জগদলপুর বেড়ানোর কথার শেষ পর্ব।
সুব্রত ঘোষ
দু’রাত চিত্রকোটে কাটিয়ে আজ (২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪) জগদলপুর ফিরব। থামতে থামতে, দেখতে দেখতে যাত্রা। সকাল সকাল চিত্রকোটের হোটেল থেকে বেরিয়ে পড়া গেল। গাড়ি প্রথম থামল পোটানার গ্রামে। শান্ত পরিবেশে জলপ্রপাতের শব্দ ভেসে আসছিল দূর থেকেই। চিত্রধারা জলপ্রপাত। বর্ষায় চঞ্চল চিত্রধারা। দুটি ধারা এই জলপ্রপাতের। উপরের দিকে একটি শিবমন্দির রয়েছে। সবমিলিয়ে চমৎকার পরিবেশ।
ছত্তিশগড়ের বস্তার জেলা যেন জলপ্রপাতের দেশ। চিত্রকোট, তিরথগড় এখাকনকার খ্যাতনামা দুই জলপ্রপাত। মেন্দ্রি ঘুমর, তামড়া ঘুমর, সাতধারা, চিত্রধারা জলপ্রপাতগুলিও কম যায় না। বর্ষার মরসুমে এদের প্রাণোচ্ছল রূপটি প্রত্যক্ষ করা যায়।
‘বর্ষাস্নাত কোরাপুট’ লেখাটি পড়তে পারেন এখানেঃ https://torsa.in/rain-soaked-koraput/
‘বর্ষায় উদ্দাম চিত্রকোট জলপ্রপাত, প্রাণচঞ্চল মেন্দ্রি ঘুমর’ লেখাটি পড়া যাবে এই লিঙ্কে
https://torsa.in/bloomed-chitrakot-in-monsoon/
চলে এলাম কাঙ্গের জাতীয় উদ্যান-ঘেঁষা তিরথগড়ে। ভরা বর্ষার মরসুমে তিরথগড় জলপ্রপাত উচ্ছ্বল। অনেকগুলো ধারা উছলে পড়ছে প্রাচীণ পাথর বেয়ে। আলোয় ঝকমক করছে প্রশস্ত জলপ্রবাহ। সবুজের প্রেক্ষাপটে তিরথগড় জলপ্রপাত এক অপূর্ব চলমান দৃশ্যপট তৈরি করেছে ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্যের জলপ্রপাত। সিঁড়ি বেয়ে নীচের দিকে যাওয়া যায়। একদা এখানে পুরনো সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। ভগ্নাবশিষ্ট ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
পরের গন্তব্য দলপত সাগর লেক। লেক, লেক-সংলগ্ন পার্ককে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে টুরিস্ট স্পট। মোট ৩৮৫ একর এলাকা জোড়া লেকের মাঝে রয়েছে শিবের মন্দির। শিবরাত্রিতে ওই মন্দিরে প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়। লেকে মোটর বোটে করে বেড়ানো যায়। লেকের পারে রয়েছে বালাজি মন্দির। তিরুপতি বালাজি মন্দিরের আদলে মন্দিরটি গড়েছেন দক্ষিণ ভারতীয় সম্প্রদায়ের মানুষেরা। সন্ধ্যায় ‘মিউজিক্যাল ফাউন্টেন শো’ আয়োজিত হয় এখানে।
জগদলপুরে আমাদের শেষ গন্তব্য ছিল দন্তেশ্বরী মন্দির। প্রাচীন দন্তেশ্বরী মন্দিরটির অবস্থান বস্তারের দন্তেওয়াড়ায়। জগদলপুর থেকে দন্তেওয়াড়া শহর ৮০ কিলোমিটার। পরে জগদলপুরে বস্তার রাজপ্রাসাদ প্রাঙ্গণেই আরেকটি মন্দির নির্মিত হয়। মা দন্তেশ্বরী বস্তার রাজবংশের কুলদেবী। শ্বেতবর্ণের মূর্তি উজ্জ্বল পোশাক ও গহনায় সজ্জিত। দন্তেওয়াড়ার মন্দিরে অধিষ্ঠিতা দেবীমূর্তির রং কালো। বস্তার রাজবংশের সদস্যরা জগদলপুরের এই প্রাসাদেই বসবাস করেন।
দিনভর জগদলপুর বেড়িয়ে রাতে আশ্রয় নিলাম চম্পাবাগ হোটেলে। ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে আমাদের কোরাপুট, চিত্রকোট, জগদলপুর ভ্রমণ শুরু হয়েছেল। আজ ২০ সেপ্টেম্বর সেই ভ্রমণে ইতি টানা গেল। কাল ভোর সাড়ে পাঁচটায় জগদলপুর থেকে হাওড়াগামী (১৮০০০) সম্বলেশ্বরী এক্সপ্রেস ধরব।
ফটো
সর্বোচ্চ স্লাইডার ফটোঃ তিরথগড় জলপ্রপাত।
চিত্রধারা জলপ্রপাত ফটো সৌজন্যঃ বস্তার প্রশাসন।
দলপত সাগর ফটো সৌজন্যঃ হ্যালো ট্র্যাভেল
তিরথগড় জলপ্রপাত-সহ অন্য সবক’টি ফটো তুলেছেন লেখক।