শ্রীনগরঃ কাশ্মীরের পর্যটন মানচিত্রে এক নতুন সংযোজন তোসা ময়দান। পীরপঞ্জাল পর্বতশ্রেণির মধ্যে অরণ্যে ঘেরা সুবিশাল ও অপরূপ এক বুগিয়াল বা তৃণভূমি। শ্রীনগর থেকে বেড়িয়ে আসা যায় দিনে দিনে। থাকার ব্যবস্থা তেমন বলার মতো কিছু গড়ে ওঠেনি এখনো। তবে কাশ্মীরের প্রকৃতির আরেক রূপ দেখে মুগধ হতে হবে। নিজে বার দুয়েক গিয়েছি। অনবদ্য লেগেছে জায়গাটা।
পর্যটকদের কাছে নতুন হলেও তোসা ময়দানের ঐতিহাসিক একটা পশ্চাৎপট রয়েছে। মুঘলরা তোসা ময়দানকে কাশ্মীরের পুঞ্চ অঞ্চলে প্রবেশের পথ হিসেবে ব্যবহার করত। তারও অনেক আগে দূর-দুরান্তের এলাকা ও প্রতিবেশী দেশ থেকেও মেষপালকরা পশুর পাল নিয়ে চলে আসত তোসা বুগিয়ালে। তাঁরাই তো এখানকার পথের আবিষ্কারক।
পরে তোসা ময়দানের একাংশ ভারতীয় সেনাবাহিনির ফায়ারিং রেঞ্জ হিসেবে ব্যবহৃত হত। ২০১৭-য় সেনাবাহিনী সমগ্র তোসা ময়দানকে জম্মু কাশ্মীর সরকারকে ছেড়ে দেয়। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ ও আড়াই কিলোমিটার প্রশস্ত তোসার তৃণভূমি। পাহাড়, পাইন দেবদারুর অরণ্যের মধ্যে তোসা ময়দান থেকে চায়না পিক, সান সেট পিক, টাতাকুটি শৃঙ্গ দেখা যায়।
শ্রীনগর থেকে গুলমার্গ রোড ধরে মাগাম, এবং সেখান থেকে আরিপন্থান হয়ে খাগ। বাগদাম জেলার একটি তহশিল খাগ। শ্রীনগর থেকে নেওয়া গাড়ি খাগে এসে থামবে। ওখান থেকে তোসা ময়দান ১০ কিলোমিটার। খাগ থেকে লোকাল গাড়ি নিতে হবে। খাগের দ্রাং গ্রামে পৌঁছে গাড়ি ছেড়ে হাঁটাপথে তোসা ময়দান বেড়িয়ে দেখা। শ্রীনগর থেকে সবমিলিয়ে ৫০ কিলোমিটার ঘন্টা আড়াইয়েক সময় লাগে একপিঠে। শেষের দিকের খানিক পথ এবড়োখেবড়ো। দ্রাংয়ে পৌঁছানোর পরে সে এক অন্য জগৎ।
গ্রীষ্মে, বিশেষ করে মে-জুন মাস তোসা ময়দান বেড়ানোর সেরা সময়। ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল-মে তোসা ময়দান বরফে ঢাকা থাকে। গ্রীষ্মে মেষপালকরা পশু চরাতে আসে তোসা ময়দানে। দৃশ্যপটে, বুনো ফুলের রংয়ে, জঙ্গুলে আঘ্রাণে গ্রীষ্মের তোসা ময়দানে উৎসবের আবহ।
ফটো সৌজন্যঃ বদগম জেলা কর্তৃপক্ষ (জম্মু-কাশ্মীর সরকার)।
লেখকের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বরঃ 6290363041 ( শ্রীনগর, জম্মু-কাশ্মীর)।