রাসবাড়ি গার্ডেন হাউস
বেলুড় মঠের কাছে গঙ্গার তীরে রাসবাড়ি গার্ডেন হাউস অন্যরকম পরিবেশে ছোট্ট ছুটি যাপনের একটি চমৎকার জায়গা। বর্ষায় চমৎকার। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের আদলে তৈরী রাধারমন জিউয়ের নবরত্ন মন্দির, রাসমঞ্চ-সহ নাটমন্দির, ছ’টি আটচালা শিবমন্দির, নহবৎখানা, ঘড়ি-ঘর, অতিথিদের জন্য থাকার ব্যবস্থা, সবমিলিয়ে বড়সড় এক কমপ্লেক্স।
১৮৯০ সালে রাসবাড়ির মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জোড়াসাঁকোর দ-পরিবারের পূর্ণচন্দ্র দ। আতিথিদের জন্য থাকার ব্যবস্থাটি নতুন।
অতীতে পুজো-পার্বণে উৎসব-মুখরিত হয়ে থাকত রাসবাড়ি। তবে মন্দিরে এখনো নিত্যপূজা হয়ে থাকে। রাসের সময় বড় আকারের উৎসব হয়। সেজে ওঠে সমগ্র মন্দির চত্বর। মন্দির প্রাঙ্গনের বাইরে মেলা বসে। মেলা চলে এক সপ্তাহ ধরে।
একেবারে নদীর ধারে রয়েছে সুন্দর একটি লন। সেখানে রঙিন ছাতার নীচে বসার ব্যবস্থা। লনে বসে গঙ্গার চলমান নানা ছবি দেখা যায়। গঙ্গা থেকে ছুটে আসা বাতাসে প্রাণ জুড়োয়।
যাওয়ার পথ
কলকাতা থেকে নিজস্ব বা ভাড়ার গাড়িতে রাসবাড়ি চলে আসা যায়। ট্রেনে এলে নামতে হবে বেলুড় স্টেশনে। সেখান থেকে রিক্সায় বা অটোরিক্সায় রাসবাড়ি চলে আসা যাবে। বেলুড় মঠের কাছেই রাসবাড়ি গার্ডেন হাউস।
থাকার ব্যবস্থা
থাকার জন্য রাসবাড়ি গার্ডেন হাউসে দ্বিশয্যা ও চার শয্যার ঘর আছে। দিনে দিনে বেড়িয়ে বেড়িয়ে আসার ব্যবস্থাও আছে। অন্তত ৪ জনের দল হতে হবে। এক্ষেত্রে একটি ঘরের সঙ্গে প্রাতরাশ, নিরামিষ মধ্যাহ্নভোজন ও বিকেলের চায়ের চায়ের ব্যবস্থা থাকে। সময় সকাল ৫টা থেকে বিকেল ৫টা।
বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন রাসবাড়ি গার্ডেন হাউসের এই নম্বরেঃ ৯০৫১৫-২৫৩০৭।
শ্যামসুন্দরপুর
দক্ষিণ ২৪ পরগণার ফলতা ব্লকের নদীতীরবর্তী একটি গ্রাম শ্যামসুন্দরপুর। ডায়মন্ড হারবার থেকে দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। কোলাহলমুক্ত সুন্দর সবুজ একটি গ্রাম। হুগলি নদী এখানে প্রশস্ত। নদী বেয়ে অনবরত যাতায়াত করে রং-বেরঙের পণ্যবাহী জাহাজ। বর্ষার নদী আরও সুন্দর। ঘোর বর্ষায় নদী দামালও বটে।দিয়ে আসে কখনও উদাসী কখনও ঝোড়ো হাওয়া উড়ে আসে। সূর্যাস্তে আকাশে, নদীতে জাদুকরী রংয়ের খেলা দেখা যায়। জোছনায় নদীর আরেক রূপ।
শ্যামসুন্দরপুরে একেবারে নদীর তীরেই রয়েছে শ্যামসুন্দরপুর রিভারসাইড রিসর্ট। রিসর্টের লন যেখানে শেষ সেখান থেকেই নদীর শুরু। লনের বিভিন্ন জায়গায় বসার জায়গা রয়েছে। নিরিবিলিতে বসে দিনভর দেখা যায় নদীর নানা চিত্র। জাহাজের চলাচল, নদীর বুকে মাছধরা নৌকার দুলুনি, নদীর জলে রৌদ্র-ছায়ার খেলা, বৃষ্টিতে নদীর অপর তীরের অদৃশ্য হয়ে যাওয়া, জোছনা নদী ২০ একর জায়গা জুড়ে রিসর্ট অঞ্চল। বাচ্চদের জন্য খেলার জায়গা, মনপসন্দ খাওয়াদাওয়া, নদীতীরের লনে বসে বিশ্রাম, গ্রামের পথে হাঁটা, নৌকায় চড়ে নদীতে ভেসে পড়া (তবে বর্ষায় সে ঝুঁকি না নেওয়াই ভালো), কাছাকাছি ডায়মন্ড হারবার বা রায়চক থেকে একটু বেড়িয়ে আসা, জমে যাবে ছুটি।
যাওয়ার পথ
এসপ্ল্যানেড থেকে শ্যামসুন্দরপুর কমবেশি ৫০ কিলোমিটার। আলিপুর, জোকা হয়ে ডায়মন্ড হারবার রোড ধরে সহজেই শ্যামসুন্দরপুর পৌঁছোনো যায়। কাছাকাছি রেলস্টেশন ডায়মন্ড হারবার। ডায়মন্ড হারবার থেকে শ্যামসুন্দরপুর ১০ কিলোমিটার।
থাকার ব্যবস্থা
শ্যামসুন্দরপুর রিভারসাইড রিসর্ট (অ্যাকোয়া রিট্রিট)। ফোনঃ ৮৭৬৮০-০৮০৯৫।
কামারপাড়া
শান্তিনিকেতন বেড়ানো হয়েছে একাধিকবার? উত্তর যদি ‘হ্যাঁ’ হয় তবে এবার চলুন বীরভূমের কামারপাড়া। শান্তিনিকেতনের কাছাকাছি। তবে নিরালায়। বোলপুর স্টেশন থেকে কামারপাড়া গ্রাম ১৪ কিলোমিটার। লাল মাটি, সবুজ খেতের কামারপাড়া ছোট্ট ছুটিতে বেশ ভালো। বর্ষায় বিরাট আকাশ জুড়ে মেঘ জমে। দিগন্ত থেকে সবুজ খেতের উপর দিয়ে ছুটে আসে বৃষ্টি। হোমস্টের বারান্দায় দেখুন সে দৃশ্য। শীতেও কামারপাড়া খুব সুন্দর।
কামারপাড়ায় থাকা মানে দূষণমুক্ত প্রকৃতি থেকে বুক ভরে প্রশ্বাস নেওয়া। গ্রামের পথে হাঁটুন। কামারপাড়া গ্রামের পাশেই রয়েছে একটি বিশাল জলাশয়, লক্ষ্মীসায়র। বর্ষায় মেঘের ছায়া ঘনায় সেই জলে। শীতে প্রতিফলিত হয় নীল আকাশ। কামারপাড়া থেকে সোনাঝুরি জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চলে যান অজয় নদের তীরে। যাবেন আমখই ফসিল পার্ক। লক্ষ লক্ষ বছর আগেকার গাছের ফসিল দেখবেন এই পার্কে। বেড়িয়ে আসতে পারেন শান্তিনিকেতন থেকে।
যাওয়ার পথ
বোলপুর স্টেশন চত্বর থেকে কামারপাড়া ১৪ কিলোমিটার। বোলপুর থেকে টোটো পেয়ে যাবেন।
থাকার ব্যবস্থা
ছোট্টনীড় হোমস্টে, ফোনঃ ৯৮০৪১-৬৮১৭৯। উদাসীন হোমস্টে, ফোনঃ ৯৮৩০০-৫৪৫৩৩।
হেডার ফটো সৌজন্যঃ উইকিমিডিয়া কমন্স।