ছোট ছুটি। চট করে একটু বেড়িয়ে আসতে পারলে ভালো হতো। একটু বিশ্রাম। নিজের বা নিজেদের মতো করে ছুটি কাটানো। নতুন জায়গার আকর্ষণ। কলকাতার কাছাকাছি এমন দুটি জায়গার কথা। বৃষ্টিতে চমৎকার।
শ্যামসুন্দরপুর
দক্ষিণ ২৪ পরগণার ফলতা ব্লকের নদীতীরবর্তী একটি গ্রাম শ্যামসুন্দরপুর। ডায়মন্ড হারবার থেকে দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। কোলাহলমুক্ত সুন্দর সবুজ একটি গ্রাম। হুগলি নদী এখানে প্রশস্ত। নদী বেয়ে অনবরত যাতায়াত করে রং-বেরঙের পণ্যবাহী জাহাজ। বর্ষার নদী আরও সুন্দর। ঘোর বর্ষায় নদী দামালও বটে। নদীর ওপর দিয়ে আসে কখনও উদাসী কখনও ঝোড়ো হাওয়া। সূর্যাস্তে আকাশে, নদীতে জাদুকরী রংয়ের খেলা দেখা যায়। জোছনায় নদীর আরেক রূপ।
শ্যামসুন্দরপুরে একেবারে নদীর তীরেই রয়েছে শ্যামসুন্দরপুর রিভারসাইড রিসর্ট। রিসর্টের লন যেখানে শেষ সেখান থেকেই শুরু নদী। লনের বিভিন্ন জায়গায় বসার জায়গা রয়েছে। সেখানেই নিরিবিলিতে বসে দিনভর দেখা যায় নদীর নানা চিত্র। জাহাজের চলাচল, নদীর বুকে মাছধরা নৌকার দুলুনি, নদীর জলে রৌদ্র-ছায়ার খেলা, বৃষ্টিতে নদীর অপর ও-পারটা অদৃশ হয়ে যাওয়া, জোছনায় মায়াময় নদী, কত দৃশ্য। ২০ একর জায়গা জুড়ে রিসর্ট চত্বর। বাচ্চদের জন্য রয়েছে খেলার জায়গা। মনপসন্দ খাওয়াদাওয়া তো থাকবেই। চায়ের কাপ নিয়ে নদীতীরের লনে বসে বিশ্রাম, গ্রামের পথে হাঁটা, নৌকায় চড়ে নদীতে ভেসে পড়া (তবে বর্ষায় সে ঝুঁকি না নেওয়াই ভালো), কাছাকাছি ডায়মন্ড হারবার বা রায়চক থেকে একটু বেড়িয়ে আসা, জমে যাবে আপনার ছুটি।
এসপ্ল্যানেড থেকে শ্যামসুন্দরপুর কমবেশি ৫০ কিলোমিটার। আলিপুর, জোকা হয়ে ডায়মন্ড হারবার রোড ধরে সহজেই শ্যামসুন্দরপুর পৌঁছোনো যায়। কাছাকাছি রেলস্টেশন ডায়মন্ড হারবার। ডায়মন্ড হারবার থেকে শ্যামসুন্দরপুর ১০ কিলোমিটার।
থাকার ব্যবস্থা শ্যামসুন্দরপুর রিভারসাইড রিসর্ট তথা অ্যাকোয়া রিট্রিটে। ফোনঃ ৮৭৬৮০-০৮০৯৫।
কামারপাড়া
শান্তিনিকেতন বেড়ানো হয়েছে একাধিকবার? তা হোক না। দৃশ্যবদল হতেই পারে। চলুন বীরভূমের কামারপাড়া। শান্তিনিকেতনের কাছাকাছি। তবে হৈ হট্টগোল থেকে অনেক দূরে। বোলপুর স্টেশন থেকে কামারপাড়া গ্রাম ১৪ কিলোমিটার। লাল মাটি, সবুজ খেতের কামারপাড়া ছোট ছুটির অবসর যাপনের জন্য একটি আদর্শ ঠিকানা। বর্ষায় বিরাট আকাশ জুড়ে মেঘ জমে। দিগন্ত থেকে সবুজ খেতের উপর দিয়ে উড়ে আসে বৃষ্টি। হোমস্টের বারান্দায় বসে ধূমায়িত চায়ের কাপ হাতে নিয়ে দেখুন সে দৃশ্য। শীতেও কামারপাড়া খুব সুন্দর।
কামারপাড়ায় থাকা মানে দূষণমুক্ত প্রকৃতি থেকে বুক ভরে প্রশ্বাস নেওয়া। গ্রামের পথে হাঁটুন। কামারপাড়া গ্রামের পাশেই রয়েছে একটি লেক, লক্ষ্মীসায়র। বর্ষায় মেঘের ছায়া ঘনায় সেই বিশাল জলাশয়ে। শীতে প্রতিফলিত হয় নীল আকাশ। কামারপাড়া থেকে সোনাঝুরি জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চলে যেতে পারেন অজয় নদের তীরে। কাছেই আমখই ফসিল পার্ক। লক্ষ লক্ষ বছর আগেকার গাছের ফসিল দেখবেন এই পার্কে। কাছাকাছি শান্তিনিকেতন তো থাকছেই।
বোলপুর স্টেশন চত্বর থেকে কামারপাড়া ১৪ কিলোমিটার। বোলপুর থেকে টোটো, গাড়ি পাওয়া যাবে।
থাকার ব্যবস্থাঃ ছোট্টনীড় হোমস্টে, ফোনঃ ৯৮০৪১-৬৮১৭৯। উদাসীন হোমস্টে, ফোনঃ ৯৮৩০০-৫৪৫৩৩।