Follow us
Search
Close this search box.

বসন্তের বিহারীনাথ

বসন্তের বিহারীনাথ

উদাত্ত আকাশের নীচে সবুজ পাহাড়। জলাশয়ে পাহাড়ের ছায়া। গ্রামমুখী গেরুয়া পথ। বর্ষায় সেই সবুজ, সেই কেশরী রঙা পথ আরও ঘন। শীতে চমৎকার রোদ্দুর, মাথার উপর নীল আকাশ। বসন্তে দিগন্তব্যাপী সেই সবুজের ক্যানভাসে পলাশ-শিমূলের বর্ণবাহার সেই আশ্চর্য তুলির টান। উজ্জ্বল লাল ও কমলা পলাশ-শিমূলের বনে
মরমিয়া আগুনের শিখা জ্বালিয়ে দেয় মার্চ-এপ্রিলে। মধ্যমণি হয়ে থাকে বিহারীনাথ পাহাড়। বাঁকুড়ার উচ্চতম পাহাড়। ১৪৮০ ফুট।

পলাশের ফুল দিয়ে দোলের রং তৈরি করেন আদিবাসীরা। সে পলাশের উৎসব। আমাদের দোল। রাস্তার পাশে অকস্মাৎ, টিলার ঢালে, জলাশয়ের পারে আর বনে বনে পলাশ। ফাগুনে। সঙ্গত করে শিমূল। আবিষ্কৃত হতে পারে সাদা পলাশ। এককালের জৈন ধর্ম-দর্শনের ভুমি বিহারীনাথ এলাকা তো বটেই, রাঢ়বঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন অঞ্চলের আদিবাসীরা পলাশের ফুল, গাছের ছাল থেকে ওষুধ করে থাকেন।

ফটো সৌজন্য : ফ্লিকার।

পলাশ বৃক্ষের একটি ইংরেজি নাম ‘বাস্টার্ড টিক’। সাহেবদের দেশে পলাশ ফোটে না। মূলত দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ফুল। প্রজাতিঃ ‘বুটিয়া মনোসপারমা’। আমাদের দেশে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের প্রতীকী ফুল পলাশ। ওই সাহেবরাই অবশ্য পলাশকে ‘ফ্লেম অফ দি ফরেস্ট’ বলে ডেকেছে। ভারতীয় ডাক বিভাগ ১৯৮১ সালে পলাশ ফুলের ছবি-সহ ডাকটিকিট প্রকাশ করেছে।

বাঁকুড়ার পশ্চিমাংশে শালতোড়ায় বিহারীনাথের পাহাড়, জঙ্গল। একদিকে পুরুলিয়া, অন্যদিকে দামোদর নদ। অঞ্চলটা পলাশের আরেকটা আড্ডা। পাহাড়ের নীচে শিব তথা বিহারীনাথের মন্দির, জলাশয়। জঙ্গুলে গন্ধ। কাছেই লেঢি পাহাড়। সুন্দর সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত দেখা যায় ওখান থেকে। পুরুলিয়ার বড়ন্তি এখন পুরুলিয়ার জনপ্রিয় বেড়ানোর ঠিকানা। বিহারীনাথ থেকে বড়ন্তী ১৫ কিলোমিটার। বেড়িয়ে আসা যায় জয়চণ্ডী পাহাড় থেকে। সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ ছবিটির বহুলাংশের শ্যুটিং হয়েছিল এই জয়চণ্ডী পাহাড় এলাকায়। বিহারীনাথ থেকে শুশুনিয়া পাহাড় ৩৩ কিলোমিটার।

ফটো সৌজন্য : বাঁকুডা জেলা।

প্রবল গ্রীষ্মের সময়টা বাদ দিয়ে বছরের বিভিন্ন সময়ে বিহারীনাথ বেডানো যায়। মরসুমে ঋতুতে, বর্ণে পাল্টে পাল্টে যায় প্রকৃতি

বাঁকুড়া শহর থেকে বিহারীনাথ ৬০ কিলোমিটার। রানিগঞ্জ থেকে ২৪ কিলোমিটার। হাওড়া থেকে ট্রেনে রানিগঞ্জ। গাড়িতে কমবেশি ৩৫-৪০ মিনিট সময় লাগে। রানিগঞ্জ থেকে গাড়ি পাওয়া যাবে। কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকা থেকে পুরোটাই নিজেদের গাড়িতে গেলে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরতে হবে। তারপর রানিগঞ্জ হয়ে বিহারীনাথ।

থাকার ব্যবস্থা

বিহারীনাথ টুরিস্ট পয়েন্ট, ফোনঃ ৮০১৭২ ০২৪৯৯
বিহারীনাথ ইকো টুরিজম, ফোনঃ ৮২৫০১ ৬৫৭৬৫

সর্বোচ্চ ফটো সৌজন্যঃ ইন্ডিয়াহাইকস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *