Follow us
Search
Close this search box.

বর্ষায় রোমান্টিক মুরগুমা

বর্ষায় রোমান্টিক মুরগুমা

সোঁদা মাটির গন্ধ বাতাসে। সবুজের মধ্যে দিয়ে গেরুয়ারঙা রাস্তা ঢুকেছে গ্রামের ভিতরে। এখানে-সেখানে বৃষ্টিস্নিক্ত বুনো ফুল। বৃষ্টিভেজা পাখি ডানা ঝাপটায়। জোরে হাওয়া বইলে হ্রদের তীর ঘেঁষে ছল ছল জল। জঙ্গল আর জলরাশি জুড়ে বৃষ্টি নামে। জলে খেলা করে মেঘের কত ছায়া। চুঁইয়ে পড়া রোদ্দুরে সেই জলে আলোর রোশনাই। জ্যোৎস্না রাতে মুরগুমার হ্রদ, বন, পাহাড় মায়াবী রূপে সাজে। গ্রাম থেকে ভেসে আসে মাদলের সুর।

পুরুলিয়ার ঝালদা ব্লকে অযোধ্যা পাহাড়ের পাদদেশে কংসাবতীর শাখানদী শহরজোড়ের ওপর বাঁধ তৈরির কারণে মুরগুমা হ্রদের সৃষ্টি হয়েছে। পাশের মুরগুমা গ্রামের নামে হ্রদের নাম। মুরগুমা হ্রদ এলাকা থেকে অযোধ্যা পাহাড়ের মনকাড়া দৃশ্যে মজতেই হবে। আবার অযোধ্যা পাহাড়ের পথে খানিকটা উপর থেকে মুরগুমা লেকের দৃশ্য সহজে ভোলবার নয়।

মার্চ, এপ্রিল, মে মাসে পলাশের লালিমা রাঙিয়ে দেয় গোটা মুরগুমা অঞ্চলটিকে। তখন সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তে হ্রদের জলে চলে রঙের খেলা। মার্চ-এপ্রিলে ফোটে মহুয়া ফুল। কম যায় না বর্ষার মুরগুমা। এ সময়ে মুরগুমা এক জলরঙা ছবি।

এখানে সকালে ঘুম ভাঙে পাখির কূজনে। প্রাতরাশ সেরে বেরিয়ে পড়ুন। হাঁটাপথে চলে যান গাড়ুবেরা, বামনী, মামুডি, লখিপুরের মতো গ্রামগুলিতে। লালমাটির প্রকৃতি, আদিবাসী জীবনের রোজনামচা সম্পর্কে একটা ধারণা হবে। চাইলে হ্রদে মাছ ধরে সময় কাটাতে পারেন। ফটোগ্রাফিতে আগ্রহীদের কাছে মুরগুমা হ্রদ অঞ্চল ও তার আশেপাশের গ্রামগুলি স্বর্গরাজ্য। মুরগুমাতে থেকেই দিনে দিনে বেড়িয়ে নেওয়া যেতে পারে অযোধ্যা পাহাড়, পাখি পাহাড়, বামনী ও তুর্গা ঝরনা, মুখোশ গ্রাম চরিদা, তারপানিয়া হ্রদ, খয়ড়াবেড়া হ্রদ, দেউলঘাটা মন্দির।

যাওয়ার পথ

সাঁতরাগাছি স্টেশন থেকে রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস, হাওড়া থেকে লালমাটি এক্সপ্রেস, হাওড়া-রাঁচি  ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, হাওড়া-পুরুলিয়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, হাওড়া-চক্রধরপুর ফাস্ট প্যাসেঞ্জার, শালিমার স্টেশন থেকে আরণ্যক এক্সপ্রেস পুরুলিয়া জংশনে যায়।

পুরুলিয়া থেকে সড়কপথে মুরগুমা ৪৫ কিলোমিটার। পুরুলিয়া স্টেশন বা শহর থেকে গাড়ি পাওয়া যাবে। হাওড়া-হাতিয়া এক্সপ্রেসে ঝাড়খণ্ডের মুরি স্টেশনে নেমে গাড়িতে মুরগুমা পৌঁছানো যেতে পারে। দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। হাওড়া-রাঁচি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসে ঝালদা স্টেশনে নেমে সেখান থেকে সড়কপথে মুরগুমা যাওয়া যায় আধ ঘন্টায়। ঝালদা স্টেশন থেকে মুরগুমা ১২ কিলোমিটার।

থাকার ব্যবস্থা

বনপলাশী ইকো হাট : এখানে রয়েছে দ্বিশয্যার এসি ও নন-এসি কটেজ , তিনশয্যার কটেজ। রয়েছে টেন্টের ব্যবস্থাও। লেকের পাশেই ইকো হাটের অবস্থান। ফোন নম্বর : ৯৮৭৪৩৬১৯৫১, (০৩৩)৪০০৭-৫৫১০।

পলাশ বিতান জঙ্গল হাট : মুরগুমা লেকের কাছে এই জঙ্গল হাটে রয়েছে চারটি ফ্যামিলি কটেজ এবং টেন্ট। ফোন নম্বর : ৯৬৭৪২২২৬৭০,৯৮৩১৩৪৭১২৩।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *